
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে তিন আসামিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক তৌফিক হাসান তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম জামসেদ আলম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- মাদারীপুর সদরের ঝাউদি ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকার বাসিন্দা এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাগমারা এলাকার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)।
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে রাজধানীর রাজাবাজারসহ কয়েকটি এলাকা থেকে এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই তিনজনই এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। সরকার পতনের আগে তামিম ও পলাশ গ্রামে নিজ বাড়িতেই থাকতো। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে চলাফেরা করতো বলে জানা গেছে। এছাড়া ডাসার উপজেলার নবগ্রাম শশীকর এলাকার সম্রাট মাদকাসক্ত বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তামিম ও পলাশ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল খাঁ ও রুবেল খাঁ গ্রুপের লোক। তাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করতো এরা। আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থাকতো এরা। এবং চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর এরা ঢাকায় চলে যায়। বাড়িতে ফেরেনি। পলাশের বাবা কালাম সরদার এক সময় পালকি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতো। অন্যদিকে তামিমের বাবা এলাকায় জমি কেনাবেঁচার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ডাসারের সম্রাট মল্লিক মাদকাসক্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বেশ কিছুদিন আগে মসজিদের মাইক লাগানো নিয়ে এলাকায় ছাত্রদের মারধর করে সে। এ নিয়ে ডাসার থানায় অভিযোগ রয়েছে সম্রাটের বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে স্থানীয় মাসুদ হোসেন বলেন, এরা ভালো পরিবারের ছেলে না। চাঁদাবাজি, মাদকের সঙ্গে জড়িত। আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতার লাঠিয়াল গ্রুপের সদস্য ছিল। এখন এলাকা ছেড়ে ঢাকায় থাকে।
ডাসারের স্থায়ী বাসিন্দা তুহিন বলেন, শুনেছি ঢাকার তিনশফিট, উত্তরা, টিএসসিসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এই গ্রুপটি।
জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন কালবেলাকে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এখানকার থানায় কোনো মামলা রয়েছে কিনা আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
অন্যদিকে ডাসার থানার ওসি শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, সম্রাটের বিরুদ্ধে ডাসার ও ডিএমপির রূপনগরসহ বিভিন্ন থানায় ৩ মাদক মামলা রয়েছে। তার বিষয়ে আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।