
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) হত্যার ঘটনায় ঢাকায় আটক মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার তামিম হাওলাদারের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। আগুন কীভাবে লেগেছে কিংবা কে বা কারা দিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটক তামিম হাওলাদার ওই এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্য হত্যা মামলায় আটক তিনজনের বাড়ি মাদারীপুরে। তাঁদের মধ্যে তামিম হাওলাদার (৩০) ও পলাশ সরদার (৩০) মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার বাসিন্দা। অপরজন সম্রাট মল্লিক (২৮) ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশীকর এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই তিনজন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। সরকার পতনের আগপর্যন্ত তামিম ও পলাশ গ্রামে অবস্থান করতেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। সম্রাট মল্লিক মাদকাসক্ত বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য।
আরও জানা গেছে, তামিম ও পলাশ আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও স্থানীয় নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় চলতেন এবং চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তাঁরা ঢাকায় চলে যান এবং এরপর আর এলাকায় ফেরেননি।
তামিমের বাবা এরশাদ হাওলাদার জমি বেচাকেনার কাজ করেন। পলাশের বাবা কালাম সরদার একসময় পালকি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
ডাসারের যতীন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট এলাকায় একজন চিহ্নিত মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন আগে স্থানীয় এক মসজিদের মাইক লাগানো নিয়ে ছাত্রদের মারধর করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ঘটনায় ডাসার থানায় একটি অভিযোগ রয়েছে।
সাম্য হত্যার ঘটনায় আটক তিনজনের বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর আজ বুধবার রাতে তামিমের বাড়িতে আগুন লাগে। এতে বসতঘর, রান্নাঘরসহ তিনটি কক্ষ পুড়ে যায়।

খবর পেয়ে মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, তাঁরা কেউ ভালো নন। চাঁদাবাজি, মাদক—সবকিছুর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের লাঠিয়াল হিসেবেও কাজ করেছেন।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তবে আগুন লাগার আগেই বসতঘর পুড়ে যায়।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা বলেন, ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তিনি এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়।