
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে জাকির হোসেন (৪১) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে লাশ খালে ফেলে দেওয়ার সময় স্থানীয়রা দুইজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকির হোসেন সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় যুবলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাকির এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। সম্প্রতি তাবলিগ থেকে ফিরে এসে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পুনরায় এলাকায় অবস্থান শুরু করেন এবং মাটির ব্যবসায় যুক্ত হন। কিন্তু একই এলাকার মাটি ব্যবসায়ী নজরুল (যিনি ‘ল্যাংড়া নজরুল’ নামে পরিচিত), তুহিন, সাদ্দামসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ সম্প্রতি আরও তীব্র হয়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকদিন আগে নজরুলের একটি ভেকু মেশিন জ্বালিয়ে দেন জাকির। এরই জেরে সোমবার (১২ মে) দুপুরে নজরুল ও তার সহযোগীরা জাকিরকে অপহরণ করে কোটবাড়িয়া এলাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
পরদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পাঁচজন মিলে জাকিরের লাশ একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে বেগমগঞ্জ উপজেলার পলোয়ান পুল এলাকায় নিয়ে যায়। খালের পাড়ে লাশ ফেলে পালানোর সময় স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া করে বাবু নামে এক যুবক ও চালক আনোয়ার হোসেনকে ধরে গণপিটুনি দেয় এবং পরে পুলিশে সোপর্দ করে। আহত অবস্থায় দুজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করেন, “বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে অপহরণ করে হত্যা করেছে। আমি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।”
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, জাকির চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় খুন, ডাকাতি, অস্ত্র, নারী অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকসহ ১১টি মামলা রয়েছে। জাকির হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।