Image description
 

চারদিকে অস্থিরতা ও সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক টানাপড়েন, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সিন্দু ও পাঞ্জাবে পানির দাবিতে বিক্ষোভ—এই সমস্ত অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যেই ভারতের সঙ্গে চরম উত্তেজনা নতুন করে ঝুঁকির বার্তা দিচ্ছে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানকে জড়িয়ে যে কোনো সময় সামরিক জবাবের হুমকি দিয়েছে নয়াদিল্লি। এমন এক উত্তাল সময়েই আরও একটি মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশটিতে।

পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। সোমবার (৫ মে) বিস্ফোরণের এক সপ্তাহ পর দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।

 

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২৮ এপ্রিল বেলুচিস্তানের নোশকি জেলার একটি জনবহুল বাজারের পাশে ওই ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

 

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, সেদিন একটি জ্বালানিবাহী ট্যাঙ্কার রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে। ট্যাঙ্কার থেকে ছড়িয়ে পড়া তেল সংগ্রহের জন্য আশপাশের মানুষ জড়ো হলে হঠাৎ আগুন ধরে যায় এবং মুহূর্তেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।

 

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান মেনগাল জানান, এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ট্যাঙ্কারে ইরান থেকে অবৈধভাবে পাচার করা জ্বালানি পরিবহন করা হচ্ছিল। ট্যাঙ্কারটি মেরামতের সময় দুর্ঘটনাবশত আগুন ধরে যায়। নিহতদের মধ্যে ট্যাঙ্কারটির চালকও রয়েছে।

আহতদের মধ্যে অনেকের শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চিকিৎসার জন্য করাচির বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, বাকি তিনজনের মরদেহ কোয়েটার মর্গে রাখা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের দুর্বল তেল সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, সীমান্তে চোরাচালান রোধে ব্যর্থতা এবং সাধারণ মানুষের দারিদ্র্যের করুণ চিত্র তুলে ধরছে।

একদিকে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ—সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সামনে এখন একাধিক সংকট।