
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতার শঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আইন মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধনের জন্য পাঠালেও এখনো কোনো সাড়া মিলছে না। ইসি বলেছে, আইন সংশোধন হলে সীমানা নির্ধারণের কাজ করা সহজ হতো। তবে আইন সংশোধনের কাজ আটকা থাকায় সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কোনো কাজ এগিয়ে নিয়ে পারছে না সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সময়মতো আইন সংশোধন না হলে বিদ্যমান সীমানায় ভোটের প্রস্তুতি নেবে কমিশন।
এদিকে জাতীয় সংসদের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫৫টি আসনের সীমানা জটিলতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৩৬৫টি আবেদন ঝুলে আছে। এর মধ্যে কুমিল্লা, গাইবান্ধা, পিরোজপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার কিছু আসন নিয়ে বেশি আবেদন এসেছে। বিগত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ১০ আসনে পরিবর্তন আনা হলেও অধিকাংশ আসনে এখনো জটিলতা রয়েই গেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত সংশোধন প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সরকারের তরফ থেকে আইন সংশোধন হয়ে এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা না হলে আগের সীমানায় ভোটের প্রস্তুতি নেবে কমিশন। এর আগে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনে কিছু প্রিন্ট মিস্টেকসহ আমরা কিছু প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এর আগে ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের পর ২০০৮ সালে ড. এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য শতাধিক আসনে সীমানা পরিবর্তন আনে। এরপর কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে গেজেট প্রকাশ করে। এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী জুনের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। আইন মন্ত্রণালয় থেকে আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনের সংশোধন কপি হাতে পেলেই নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে পারবে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অনেক জেলার আসনে জনসংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য নেই। কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ জেলায় রয়েছে ১১টি করে সংসদীয় আসন। কুমিল্লার জনসংখ্যা ৫৩ লাখের বেশি। ময়মনসিংহের জনসংখ্যা ৫১ লাখের বেশি। ৩৬ লাখ জনসংখ্যার টাঙ্গাইলে আছে আটটি আসন। অন্যদিকে গাজীপুরে ৩৪ লাখের বেশি এবং নারায়ণগঞ্জে ২৯ লাখের বেশি জনসংখ্যা থাকলেও উভয় জেলায় সংসদীয় আসন পাঁচটি করে। একইভাবে চুয়াডাঙ্গায় ১১ লাখের বেশি জনসংখ্যায় আসন রয়েছে দুটি।