
ঘটনা ২০১৭ সালের। ওই বছরের ৩ এপ্রিল রাত ১০টায় ঢাকায় পা রাখেন ব্রাজিলিয়ান তরুণী জেইসা ওলিভেইরা সিলভা। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী বলাই ঘোষের ছেলে সঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রাজিলের সাও পাওলো থেকে ছুটে আসেন ২৯ বছর বয়সী জেইসা।
দীর্ঘ দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর বাংলাদেশে আসেন তিনি।
সিলভাকে বরণ করে নিতে আগে থেকেই বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন প্রেমিক সঞ্জয়। সেখান থেকে তারা চলে যান গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বিষয়টি জানাজানি হলে সঞ্জয়ের বাড়িতে ভিড় জমে যায়। তাদের অনুরোধে পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করে।
পরদিন বুধবার (৫ এপ্রিল) সঞ্জয় ও সিলভা ঢাকায় চলে যান। ৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর মিরপুরে একটি বাসায় তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয় বলে জানাজানি হয়। ১০ এপ্রিল (সোমবার) ঢাকা থেকে ব্রাজিল ফিরে যান জেইসা ওলিভেইরা সিলভা। এরপর থেকে তাদের মধ্যে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
রবিবার রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে সঞ্জয়ের গ্রামের বাড়িতে গেলে সঞ্জয় ও সিলভা বিষয়ে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। সঞ্জয়ের মোবাইল নম্বর চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তারা। পরে সঞ্জয়ের বন্ধুদের মাধ্যমে তার নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করা হলেও রবিবার দুপুর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সঞ্জয়ের বন্ধু ও প্রতিবেশীরা জানান, সঞ্জয় শ্যামলী পরিবহনে কাজ করতেন। হঠাৎ করেই ব্রাজিলের এক নারীকে নিয়ে জামালপুর আসেন। জামালপুরে তারা দুই দিন ছিলেন। এখানে কোনো বিবাহ হয়নি। শুনেছি ঢাকায় তারা বিবাহ করেন। ঢাকায় যাওয়ার কয়েক দিন পর সেই তরুণী ব্রাজিলে ফিরে যান। সঞ্জয় মাঝে মাঝে জামালপুরে আসেন। তিনি বিয়ে করেছিলেন কি না, তা তারা নিশ্চিত নন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ সোহেল মিয়া বলেন, “ব্রাজিল থেকে ছুটে আসা ওই তরুণীকে নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে একটি নিউজ করেছিলাম। তারা আদৌ বিবাহ করেছিলেন কি না, পরিবার থেকে সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই মেয়ের শেষ পরিণতি কী হয়েছে, তা বের করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে সঞ্জয় দেশে বিয়ে করে ভালো আছেন।”
সঞ্জয় ঘোষের পিতা বলাই ঘোষ বলেন, “বন্ধুত্বের টানে ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে আসেন সিলভা। তিনি জামালপুরে আমাদের বাড়িতে দুই দিন ছিলেন এবং পরে কয়েক দিন ঢাকায় ছিলেন। তাদের কোনো বিয়ে হয়নি। ঢাকা থেকে পরবর্তীতে তিনি ব্রাজিলে ফিরে যান। বর্তমানে আমার ছেলে ঢাকায় বসবাস করছে। দুই বছর আগে গোপালগঞ্জে বিয়ে করেছে সে। তাদের একটি ছেলে রয়েছে এবং তারা সবাই মিলে ঢাকায় সুখে আছে।”