Image description
 

জম্মু-কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বৈসারণ উপত্যকায় ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন গুজরাটের পর্যটক ঋষি ভাট। পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করছিলেন জিপলাইনের রোমাঞ্চ। কিন্তু সেই রোমাঞ্চ মুহূর্তেই রূপ নেয় প্রাণ বাঁচানোর দৌড়ে। কারণ, সন্ত্রাসীরা শুরু করে দেয় বেপরোয়া গুলি চালানো। আর সেই বিভীষিকাময় মুহূর্ত অনিচ্ছাকৃতভাবে ধরা পড়ে যায় ঋষির মোবাইল ক্যামেরায়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ঋষি ভাট জিপলাইনের ঘুরছেন এবং মাঝ আকাশ থেকে মোবাইলের সেলফি ক্যামেরায় নিজেকেসহ নিচের উপত্যকার দৃশ্য ভিডিও করছেন। কিন্তু সেই মুহূর্তেই নিচে শুরু হয় তাণ্ডব— একের পর এক পর্যটক গুলিতে লুটিয়ে পড়ছেন। বাতাসে ভেসে আসছে গুলির শব্দ।

ঋষি ভাটের ধারণ করা ভিডিওটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। গুজরাটের এই পর্যটক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী, ছেলে এবং আরও চারজন আগে জিপলাইনে পার হয়ে গিয়েছিলেন। আমি যখন লাইনে উঠি, তখনই হঠাৎ জিপলাইন অপারেটর তিনবার ‘আল্লাহু আকবর’ চিৎকার করে ওঠে। তারপরই শুরু হয় গুলির শব্দ।’

 

তিনি বলেন, প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। ১৫-২০ সেকেন্ডের মধ্যে দেখি একজন লোক নিচে পড়ে যাচ্ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে জিপলাইন থামাই, প্রায় ১৫ ফুট ওপর থেকে ঝাঁপ দিই এবং দৌড়ে যাই আমার স্ত্রী ও ছেলের দিকে। তিনি বলেন, তখন মাথায় একটাই চিন্তা ছিল— বাঁচতে হবে।

 
 

ঋষি বলেন, আমি জিপলাইনে ছিলাম বলেই বেঁচে যাই। আমি চোখের সামনে ১৬ থেকে ১৮ জনকে মারা যেতে দেখি। এটি ছিল এক ভয়ংকর গণহত্যা।

 

গুজরাটের পর্যটকের দাবি, সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তারক্ষীর পোশাকে ছদ্মবেশে ছিল। তিনি দৌড়ানোর সময় দুজন আসল নিরাপত্তারক্ষীকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তার ধারণা, তাদের ইউনিফর্ম খুলে নেওয়া হয়েছিল এবং সন্ত্রাসীরা সেগুলো পরেই হামলা চালায়।

তিনি জানান, হামলা থেকে পালিয়ে তিনি একটি গাছপালা ঘেরা জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন প্রায় ২০ মিনিট। স্থানীয়রা আগেই পালিয়ে যায়। কোনো সাহায্য ছিল না। তবে সেনাবাহিনী খুব দ্রুত, মাত্র ১৮ মিনিটের মধ্যে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ ওই সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটক প্রাণ হারান। এঘটনায় ভারত ও পাকিস্তান পরষ্পরকে দোষারোপ করে এবং দুদেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ভয়াবহ এই হামলার পর বিশ্বজুড়ে ওঠে নিন্দার ঝড়।