
পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় বেশ পিছিয়ে পড়েছেন নারীরা। লিখিত পরীক্ষার আগেই ছিটকে গেছেন আবেদনকারীদের মধ্যে সাত ভাগের ছয় ভাগ। আগামী ৪ মে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিবেন মাত্র ৯ জন নারী প্রার্থী। অনলাইনে মোট আবেদন করেছিলেন ৬৩ জন নারী।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ নারী প্রার্থী উচ্চতার কারণে বাদ পড়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষায়ও তারা উত্তীর্ণ হতে পারেননি। যে কারণে আবেদনকারীর তুলনায় এখন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা অনেক কম। বিপরীতে পুরুষ প্রার্থীতে বেশ আধিক্য লক্ষ্য করা যায়।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কনস্টেবল পদে মোট ৩৯ থেকে ৪০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এরই প্রেক্ষিতে ৫২৪ জন পুরুষ ও ৬৩ জন নারী অনলাইনে আবেদন করেন। ৬, ৭ ও ৮ এপ্রিল মাঠ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩৭৫ জন পুরুষ ও ৪২ জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষা শেষে ২৭৮ জন পুরুষ ও মাত্র ৯জন নারী প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ৪ মে লিখিত পরীক্ষা এবং ১৪ মে মনস্তাত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কনস্টেবল নিয়োগে পুরুষের ক্ষেত্রে মেধা কোটায় ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতা ধরা হয়। নারীদের ক্ষেত্রে এটি ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। তবে বিভিন্ন কোটার ক্ষেত্রে আরো ২ ইঞ্চি কম। এছাড়া ২০০ মিটার দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প, হাই জাম্প, দীর্ঘ দৌড়, টায়ার ড্রাগিং, রোপ ক্লাইম্বিংয়ের বেলায়ও পুরুষের চেয়ে নারীদের সময়, দূরত্ব কম রাখা হয়। এসব শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক নারীরা ছিলেন বেশ পিছিয়ে। যে কারণে তাদেরকে বাদ পড়তে হয়।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, ‘নারীরা এমনিতেই নানাভাবে পিছিয়ে আছে। পুলিশে যোগদানের ক্ষেত্রে সামাজিক নানা প্রতিকূলতার জন্য তারা এখনো সেভাবে মানসিকভাবে প্রস্তুত নন। যারাই পুলিশের আসতে চান শুধু আর্থিক কারণে হুটহাট সিদ্ধান্ত নেন।’
তিনি বলেন, ‘নারীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে গ্রামীণ যে খেলাধুলা সেগুলো আগের মতো না হওয়াটাও একটা কারণ। এক্ষেত্রে আমাদেরকে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে। নইলে শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে নয় অন্য চাকরির ক্ষেত্রেও নারীরা পিছিয়ে পড়বেন।’
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘নারী প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত যে উচ্চতা ছিল সেই অনুযায়ী না হওয়ায় অনেক প্রার্থী বাদ পড়ে যান। অনেকে আবার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেননি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শারীরিক পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের জন্য যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সময় পুরুষ প্রার্থীদেরকে রাখা হয়নি।’ লিখিত পরীক্ষার জন মাত্র ৯জন নারী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।