
জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি)। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, ‘এই হামলা "সন্ত্রাসবাদের নিন্দনীয় কাজ" যা বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। হামলায় জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) জম্মু ও কাশ্মীরে বন্দুকধারীর হামলা সম্পর্কে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি। ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়ে এতে বলা হয়, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীরা পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়। যেখানে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। কাউন্সিলের সভাপতি জেরোম বোনাফন্ট এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
কাউন্সিল পুনর্নিশ্চিত করেছে, সন্ত্রাসবাদ তার সব রূপেই বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। বিবৃতিতে এই ধরনের সহিংসতার নির্বিচার প্রকৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে এবং জোর দিয়ে বলা হয়েছে, কোনো আদর্শ বা উদ্দেশ্য নিরপরাধ বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার ন্যায্যতা দেয় না।
জম্মু ও কাশ্মীর অস্থিতিশীলতার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে রয়ে গেছে। সংঘাত প্রবণ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক উদ্বেগকে প্রতিফলিত করে বলেও জানায় সংস্থাটি। এ ছাড়া জবাবদিহিতার উপর জোর দিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএসসি।
বিবৃতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আইন এবং বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনের অধীনে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করা, সন্দেহভাজনদের হস্তান্তর করা এবং সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের আর্থিক সহায়তা বন্ধ করা।
বিবৃতিতে আরও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, রাজনৈতিক, মতাদর্শগত বা ধর্মীয় প্রেরণা নির্বিশেষে যে কোনো পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসবাদ অযৌক্তিক। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ মানবাধিকার ও মানবিক বাধ্যবাধকতাসহ আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হাতে ২৬ জন নিহতের পর নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে দুইদেশে। ভয়াবহ এই সন্ত্রাসী হামলার পেছনে পাকিস্তানের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ভারত এবং দেশটির বিরুদ্ধে সিন্ধু চুক্তি বাতিলসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।
পাকিস্তান ভারতের অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধসহ পাল্টা পদক্ষেপ নেয়। উভয়পক্ষই একে অপরের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা সুবিধা বাতিল করেছে। সীমান্ত ক্রসিংও বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান ও ভারত। এ ছাড়া সীমান্তে দু’দেশের সেনাদের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় চলে গুলি বিনিময়।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস