
টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলন ও ৫৭ ঘণ্টা অনশনের পর অবশেষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের এই সিদ্ধান্তের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা চত্বরে পতাকা উড়িয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেছেন, চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারের পরাজয় ঘটেছে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. ফারুক হোসেন বলেছেন, ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের ক্লাস বর্জনের আগের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম একটা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন করে আসছিল, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির করাল গ্রাসে বন্দি। এ কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে শিক্ষকদের কোনো চেষ্টাই সফল হয়নি।’
তারা বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টাসহ তার পাঠানো প্রতিনিধিদলও এক্ষেত্রে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক হোসেন বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের আগের সিদ্ধান্ত বহাল আছে।
অপরদিকে কুয়েটের উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতির খবরে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি আবেদন করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, জুলাই ২০২৪ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখি। পরে আমাকে কুয়েটের উপ-উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ দেন। তবে যোগদানের পরই প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। তবে উপাচার্য আমাকে কোনো প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি।
এর আগে বুধবার রাত ১টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুয়েটের সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এর পরপরই ক্যাম্পাসে অবস্থান করা ইউজিসির প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। এ খবরে রাতেই ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।