Image description

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে উচ্চশিক্ষা নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থী। 

রবিবার (৬ এপ্রিল) মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান ঢাবি শিক্ষক কে এম তানভীর। আর আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টের মধ্য দিয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ইবি শিক্ষার্থী জাকির হোসেন।  

জানা গেছে, গাজায় দখলদার ইসরায়েলের চালানো সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডিতে দেওয়া ভর্তির অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন ঢাবি শিক্ষক কে এম তানভীর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড ডাটা সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট প্রভাষক তানভীরকে ২০২৫ ফল-এ পিএইচডিতে ভর্তির অফার করে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো বার্তায় তার হ্যাঁ/না মতামত জানতে চাওয়া হয়। সেই অফার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গত ৪ এপ্রিল ফিরতি বার্তা পাঠান প্রভাষক তানভীর। অফার ফিরিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি ও ইসরায়েলের চালানো গণহত্যাকে উল্লেখ করেন।

এদিকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইবি শিক্ষার্থী জাকির হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের স্নাতক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভর্তির অফার লেটারের ছবি ও তা প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি কমিটিকে পাঠানো মেইলের একটি স্ক্রিনশট যুক্ত করেছেন। 

জাকির জানান, গত ২৭ মার্চ ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সে থেকে সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে এমএসে ভর্তি অফার পেয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘সম্ভবত আমার অ্যাকাডেমিক যাত্রার সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর একটি নিয়েছি। আমি সম্মানিত বোধ করেছি, ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটি থেকে সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে ভর্তির অফার পেয়ে। কিন্তু অনেক চিন্তাভাবনার পর এবং গাজায় চলমান মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে আমি সেই অফারটি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য। আমি বিশ্বাস করি, এমন সময়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলো বিবেক ও ন্যায়ের শক্তিশালী বার্তা বহন করতে পারে। আমার হৃদয় গাজার সঙ্গে।’

উল্লেখ্য, সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে জাকিরের একাধিক অর্জন রয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাইবার সিকিউরিটি প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেন তিনি। এছাড়া তিনি এবং তার দল ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সাইবার ড্রিল ২০২২-এ দ্বিতীয় রানারআপ হয়।