
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ৪১ বছর ধরে নীরবে-নিভৃতে কাজ করছেন কুষ্টিয়ার মিরপুরের বাসিন্দা হাফেজ আব্দুল হান্নান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিরপুর পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামে মানুষকে কুরআন শিক্ষা দিচ্ছেন। প্রতিদিন বিরামহীনভাবে এই মহান কাজটি আনন্দের সঙ্গে করে যাচ্ছেন আব্দুল হান্নান। অথচ তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন না, শুধু আল্লাহর ওয়াস্তে এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করছেন।
হাফেজ আব্দুল হান্নান জানান, প্রথম দিকে তিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুরআন পড়া শেখাতেন। পরে ১৯৮৪ সালে বাড়ির উঠানে গ্রাম্য ছেলেমেয়েদের কুরআন শেখানো শুরু করেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ১৯৮৬ সালে তিনি বাড়ির পাশে রাস্তার ধারে একটি মাটির ছাপরা ঘর তৈরি করেন এবং সেখানে শিক্ষাদান অব্যাহত রাখেন। এরপর ১৯৯৫ সালে তার বাবা আব্দুল আজিজ শেখ মক্তব ঘর গড়ার জন্য এক কাঠা জমি দেন এবং সেখানে একটি মক্তব স্থাপন করেন। এই মক্তবের মাধ্যমে তিনি নিজের গ্রাম ছাড়াও আশপাশের কয়েক হাজার মানুষকে বিনা পারিশ্রমিকে কুরআন শিখিয়েছেন।
এই কুরআনে হাফেজ বলেন, বাড়ির সেই মক্তব ঘরটি এখন না থাকলেও বর্তমানে আমি তিনটি স্থানে কুরআন শিক্ষা দিচ্ছি। এর মধ্যে সুলতানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থান, মিরপুর টুইন কোয়ার্টার ও বাজারপাড়া ওয়াক্তেয়া মসজিদ। এই তিনটি স্থানে প্রতিদিন নিয়ম করে কুরআন শিক্ষা দেওয়া হয়।
হাফেজ আব্দুল হান্নান বলেন, নিজ গ্রাম ছাড়াও আশপাশের এলাকার অনেক মানুষকে বিনা সম্মানিতে কুরআন শিখিয়েছি। যারা কুরআন শরীফ কেনার সামর্থ্য রাখেন না, তাদের আমি বিনামূল্যে পবিত্র কুরআন উপহার দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ‘যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন এই কাজটি করে যেতে চাই।’