Image description
 

আত্মগোপনে থেকেও রক্ষা পাননি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কৃষক লীগের আহ্বায়ক ও ভাতগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি এখন কারাগারে।

অল্পদিনের ব্যবধানে শূন্য থেকে কোটিপতি হন এই ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন। তিনি উপজেলার ভাতগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র। এমপি মানিকের কৃপায় বেকার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বনে যান তিনি।

বুধবার রাতে থানা পুলিশ অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযান পরিচালনা করে তার নিজ বাড়িসংলগ্ন হায়দরপুর বাজার এলাকা থেকে আওলাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১১ সালের নির্বাচনে ভাতগাঁও ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওলাদ হোসেন। এক সময় বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ছিলেন। তার এলাকায় মাস্টার হিসেবে পরিচিত।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি থানার দালালি শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল আহমদ। এ সময় বিল্লাল আহমদকে সহযোগিতা করেন। এরপর সাবেক এমপি মানিক পরিবারের আস্থাভাজন হিসেবে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তিনি।

২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। সাবেক এমপি মানিকের সরাসরি হস্তক্ষেপে উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের পেছনে ফেলে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে যান আওলাদ হোসেন। ২০১৮ সালে উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন আওলাদ হোসেন। এর আগে কখনো তাকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দেখেননি এলাকার মানুষ।

আওলাদ হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে কয়েক বছরের ব্যবধানে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন। তার টাকার উৎস ছিল ভুয়া প্রকল্প, থানায় দালালি, জমি দখল ও বেচাকেনা। অবৈধভাবে উপার্জিত টাকার সিংহভাগই লন্ডনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, উপজেলায় তার গ্রামের বাড়িতে ভাতগাঁও মৌজায় প্রায় ৩০ একর জমি কিনেছেন। সিলেটের আখলিয়া এলাকায়  আব্দুল মান্নান ভিলা তার বাবার নামে আলিশান বাসা রয়েছে; যা তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এসব করেছেন। এছাড়া তার ছেলেকে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে লন্ডনে পাঠিয়েছেন। আওলাদ হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেকে সাবেক এমপি মানিকের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। কাজ না করেই টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটার টাকা ও চাল উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

ছাতক থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার আওলাদ হোসেনকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আসামিকে সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আওলাদ হোসেন পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।