
আকিজ সিমেন্টের পণ্য চালান নিয়ে ঢাকা কাস্টম হাউসে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। আমদানিকারক ঘোষিত মূল্যে শুল্কায়ন না করায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান রাশা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্মীসহ সিঅ্যান্ডএফের কর্মীরা। মারধরের শিকার কর্মকর্তা বিষয়টি কাস্টম ও ভ্যাটের নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাকাএভকে অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে দিনভর মুখোমুখি অবস্থানে ছিলেন শুল্ক কর্মকর্তা ও সিঅ্যান্ডএফরা। পরে কাস্টম কর্মকর্তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের এআইএন লক করে দেওয়া হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে কাস্টম হাউস থেকে। এ ছাড়া কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ঢাকা কাস্টম হাউস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বুধবার ঢাকা কাস্টম হাউস আকিজ সিমেন্টে শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে স্পেয়ার পার্টস ফর মোবাইল ক্রেনসহ প্রায় ১৭ ধরনের পণ্যের চালানের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। আইজিএমে পণ্য চালানটির মূল্য ঘোষণা করা হয় প্রায় ৬০ হাজার ইউরো। আর শুল্কায়নের ক্ষেত্রে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান রাশা ইন্টারন্যাশনাল ঘোষণা দেয় ৫৩ হাজার ৬৯২ ইউরো। পণ্যে চালানের মূল্যে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় লাখ টাকার পার্থক্য হওয়ায় শুল্কায়নে আপত্তি জানান সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। কারণ, আইন অনুযায়ী আইজিএম ভ্যালুর নিচে শুল্কায়ন করার সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে
বাগবিতণ্ডা হলেও একপর্যায়ে রাজস্ব কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। কিন্তু শুল্ক কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলার পরও নীরব ছিলেন কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা।
বুধবার ঘটনাটি ঘটলেও কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃহস্পতিবার তিন দফা দাবি উত্থাপন করে কাস্টম কর্মকর্তাদের সংগঠন বাকাএভ। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে—সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের এআইএন লক করতে হবে, প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে এবং কর্মকর্তাকে মারধরকারী সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পরে কর্মকর্তাদের চাপের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম দুটি দাবি বাস্তবায়ন করে কাস্টম হাউস।
জানতে চাইলে ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেন কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বিষয়টি নিয়ে আকিজ সিমেন্টের জিএম মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে প্রথমে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং বিষয়টি কে দেখে তা-ও জানেন না বলে এই প্রতিবেদককে জানান। পরে ঢাকা কাস্টম হাউসে তাদের শিল্পের কাঁচামাল পণ্যের চালান নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা উল্লেখ করলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং ফোনের লাইন কেটে দেন।