
এগিয়ে আসছে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদে নতুন পোশাক পরার রীতি বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করেছেন রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে। সকাল থেকেই ব্যস্ততা বাড়ে বেচাকেনায়, চলে অনেক রাত পর্যন্ত।
গতকাল সরজমিন নিউমার্কেটে দেখা গেছে, শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ কেনাকাটা করতে এসেছেন। এবারের ঈদে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে- পাকিস্তানি আগানুর, শাহিনশাহ, তাওকাল, মুসলিম অরগেঞ্জা, সিকুয়েন্স, সাদা বাহার, কারিজমা ও সারারা থ্রি পিস। তালিকায় রয়েছে শাড়িও। এ ছাড়া গরমকে সামনে রেখে ক্রেতারা আরামদায়ক সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন। ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে- শার্ট, প্যান্ট, জুতা, পাঞ্জাবি ও পায়জামা।
রাজধানীর রায়েরবাগ থেকে কেনাকাটা করতে নিউমার্কেটে আসা রোমান বলেন, প্রতি বছর পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য নিউমার্কেট থেকে কেনাকাটা করি। কিছুদিন পর ভিড় বেড়ে যাবে। তাই আগেই কেনাকাটা সেরে ফেললাম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইয়াসমিন তার মাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন ঈদ কেনাকাটায়। তিনি বলেন, শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় কেনাকাটা করতে এসেছি। এবার গরমের মৌসুম হওয়ায় পাতলা কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি।
যাত্রাবাড়ী থেকে কেনকাটা করতে নিউমার্কেটে এসেছেন হাফসা আক্তার। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে গ্রামের বাড়ি চলে যাবো। এজন্য কাপড় কিনতে আসা। পরিবারের লোকজনের জন্য কিনে নিয়ে যাবে। এখানে একসঙ্গে অনেক দোকান থাকায় পছন্দমতো কেনাকাটা করা যায়। নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ননী ঠাকুর বলেন, শুক্রবার থেকে বিক্রি বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। রাত ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত আমাদের দোকান খোলা থাকে। ইফতারের পরে নিউমার্কেটের আশপাশের বাসিন্দারা কেনাকাটা করতে আসেন। ছিনতাই সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্রেতাদের মধ্যে একটু আতঙ্ক রয়েছে ছিনতাই নিয়ে। নিউমার্কেটে ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা এখনো পর্যন্ত আমরা শুনিনি। জান্নাতুল ফেরদৌস নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমরা সাধারণত পরিবারের জন্যই নতুন জামাকাপড় কিনতে আসি। পাশাপাশি নিজেদের জন্যও পোশাক, মেকআপ প্রোডাক্টস দেখি। আর আজকে অনেক বেশি ভিড়। দোকানগুলোতে নানা ধরনের পোশাকের স্টক থাকলেও ক্রেতাদের ভিড়ের কারণে প্রয়োজনীয় সামগ্রী খুঁজে পেতে দেরি হচ্ছে। দোকানের স্টাফরা বেশি সময় দিতে পারছেন না।
ওদিকে, শুক্রবার রাত ১০টার পরও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে শনির আখড়া আরএস সুপার মার্কেটে। ক্রেতাদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে দোকানিদের। স্ত্রী আর সন্তানকে নিয়ে আরএস সুপার মার্কেটে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাহবুব আলম। তিনি বলেন, আনন্দ উপভোগ করতেই নতুন পোশাক কিনতে এসেছি। ছুটির দিন থাকায় কেনাকাটা করতে চলে এসেছি। বাচ্চারা নতুন পোশাক পেয়ে খুব খুশি। ব্যাংকে কর্মরত শারমিন আক্তার বলেন, ঈদের বাকি আর মাত্র ১৫ দিন। মেয়েদের একটু আগেভাগেই কেনাকাটা করতে হয়। কারণ পোশাকগুলো আবার সেলাই করতে দিতে হয়। দর্জির দোকানেও অনেক ভিড় থাকে। তাই শুক্রবার ছুটির দিনে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। আরএস মার্কেটের ব্যবসায়ী সাকিল হোসেন বলেন, এতদিন ক্রেতাদের তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। ঈদে ক্রেতাদের চাপ ১৪ রমজানের পর থেকে বেশি হয়। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি হয়।