
দীর্ঘ ৮ দিন ধর্ষণের বিচারসহ ৫ দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর এবার অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী তাসনীম আফরোজ ইমি।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে একটি ফেসবুক পোস্টে ইমি তার অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এর আগে সন্ধ্যায় ইমির সঙ্গে দেখা করে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
ইমি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টার দিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শাহবাগে আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন এবং আমাদের ৫ দফা দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দেন। তার প্রতি আস্থা রেখে আমি আপাতত আমার অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করছি। আশা করছি আপাতত আর রাস্তায় থাকতে হবে না। এরপরও যদি প্রয়োজন হয় আবার, বারবার রাস্তায় নেমে আসবো।
এর আগে গত ৮ মার্চ ধর্ষকের বিচার ও নারী নির্যাতন বন্ধসহ ৫ দাবিতে লাগাতার অনশন কর্মসূচি শুরু করে এই শিক্ষার্থী। তার দাবিগুলোর মধ্যে ছিল—
১। ধর্ষণ ও বলাৎকারের বিচার কার্যক্রম নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে।
২। আগামী ৭২ ঘণ্টার ভেতর প্রতিটি থানায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার নারী ও শিশু নির্যাতন একটি জরুরি ক্রাইসিস রেসপন্স টিম গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে থানার অভ্যন্তরে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সহায়তা আইন সহায়তা ও মানসিক এখন সেবা দেওয়া হবে।
৩। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা-২৪ সংশোধন করে ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের ওপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে, সেই ধারায় সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।
৪। ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে।
৫। নারী ও শিশুর ওপর সংঘটিত সব ধরণের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী ও শিশুদের সচেতন করা যাবে। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজে নৈতিক শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা পাঠদানের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।