Image description

চট্টগ্রাম মেডিকলে কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বকশিশ না পেয়ে আয়া অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ওই নবজাতকের বাবা কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিলখালি ইউনিয়নের জারুল বুনিয়া এলাকার বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন।  

নবজাতকের পরিবারের অভিযোগ, বকশিশ না দেওয়ায় অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে রাখার কারণে শিশুটি মারা গেছে। এর আগেও শিশুটি খেলা করছিল। এ ঘটনার পর ওই ওয়ার্ডবয়কে বের করে দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চমেক হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডবয় ও আয়াদের বিরুদ্ধে বকশিশ ছাড়া কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তারা প্রয়োজনীয় সেবা পেতে টাকা দিতে বাধ্য হন।   

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৭ দিন আগে চকরিয়ার জমজম হাসপাতালে ওই নবজাতকের জন্ম হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় সেখান থেকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত ৯ মার্চ নবজাতককে চমেক হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিল শিশুটি। শনিবার সকাল ১০টার দিকে শিশুটি স্বাভাবিক আচরণ করছিল এবং খেলা করছিল। একপর্যায়ে অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে নবজাতকের বাবা বেলাল ওয়ার্ডের আয়াকে নতুন করে অক্সিজেন দিতে বলেন। অভিযোগ ওঠেছে, বকশিশ না দেওয়ায় ওয়ার্ডবয় অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখেন। এরপর শিশুটির বাবা-মাকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দিয়ে পরিচ্ছন্নতার কথা বলে প্রায় দেড় ঘণ্টা বাইরে অপেক্ষা করানো হয়। পরে যখন তারা প্রবেশের অনুমতি পান, তখন দেখেন শিশুটি মারা গেছে।

শিশুটির বাবা বেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, এই হাসপাতালের আয়া ও ওয়ার্ডবয়রা বকশিশ ছাড়া এক কদম নড়ে না। প্রতিবার অক্সিজেন লাগানোর  জন্য ২০০ টাকা করে চাওয়া হয়। কিন্তু আজ টাকা না দেওয়ায় আমার সন্তানের জীবন চলে গেল। আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরি করে চলি। গরিব বলেই এখানে আসছি, প্রতিবার ২০০ টাকা করে কই পাবো? ওদেরকে ডাকতে ডাকতে হয়রান হয়ে গেলেও আসে না। টাকা দিলেই কাজ করে, নয়তো করে না।

এই দিনমজুর বাবা বলেন, ওরা যদি অক্সিজেন সময়মতো দিত, তাইলে আমার বাচ্চা সুস্থ থাকত। টাকা দিতে পারলাম না বলে আমার বাচ্চাটা মারা গেল। আমার স্ত্রী হার্টের রোগী। বাচ্চার জন্য কান্না করতে করতে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।    

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনা শুনার পর ওয়ার্ড থেকে ওই আয়াকে বের করে দেয়া হয়েছে। পরে বিভাগীয় প্রধানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কোনো ওয়ার্ডবয় বা আয়া যদি এ ঘটনায় জড়িত, তা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।