Image description
রোহিঙ্গা শনাক্ত করা। আজ বাংলাদেশে আসছে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি, কাল ইসির সঙ্গে বৈঠক। ডেটাবেইস পেলে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকানো সহজ হবে: ডিজি, এনআইডি

মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিপাকে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারণ মাঝেমধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁরা ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাঁদের সহজে শনাক্ত করতে জাতিসংঘের হাতে থাকা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিকসহ ডেটাবেইস (তথ্যভান্ডার) ব্যবহার করতে চায় ইসি।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিকসহ একটি তথ্যভান্ডার রয়েছে ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনার ফর রিফিউজিসের (ইউএনএইচসিআর) কাছে। ইউএনএইচসিআর হলো জাতিসংঘের একটি সংস্থা—যারা শরণার্থী, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায় এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের সহায়তা, সুরক্ষা এবং তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন, স্থানীয় একীভূতকরণ বা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসনে সহায়তা করে।

সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি ও কক্সবাজার জেলার ৩২টি।

উপজেলাকে ইতিমধ্যে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছে ইসি। এসব এলাকার জন্য গঠন করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। ভোটার হওয়ার জন্য পূরণ করতে হয় বিশেষ ফরম। তারপরও দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নানা সময়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার চেষ্টা দেখা গেছে। বিভিন্ন সময় ভোটার হতে গিয়ে আটকও হয়েছে অনেকে। ইউএনএইচসিআরের ডেটাবেইসটি ব্যবহারের সুযোগ পেলে রোহিঙ্গা কি না, তা শনাক্ত করা সহজ হবে।

এ বিষয়ে কথা হলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকা বলেন, ‘বায়োমেট্রিকসহ রোহিঙ্গাদের ডেটাবেইস আমাদের কাছে নেই। এটি না থাকার কারণে কোনো রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়ছে কি না, তা সফটওয়্যার দিয়ে আমরা চেক করতে পারছি না। যদি ওই ডেটাবেইসটা পাই, তাহলে আমরা অনেকটা নিরাপদ হতে পারব।’

ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে একটি দল আজ রোববার বাংলাদেশে আসবে বলে জানান হুমায়ুন কবীর। আগামীকাল সোমবার তাঁরা ইসির টেকনিক্যাল লোকদের সঙ্গে বসবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি সমন্বয় করছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বহির্গমন-২ অধিশাখা) মোহাম্মদ আবু নঈম জানান, ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ডাটাবেইস তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বায়োমেট্রিকসহ ডাটাবেইস জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

মিয়ানমারে নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইন (আরাকান) রাজ্য থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে স্রোতের মতো ঢুকতে শুরু করে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে পারেনি রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা রয়েছে।