
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের কাছ থেকে আমার দুইটি শিক্ষা! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক 'বাকশাল'র উপকারিতা ও বাকশাল কেন অপরিহার্য, এবিষয়ে আমাকে একটি লম্বা বক্তব্য শুনিয়েছিলেন।
সম্ভবত ২০১০ সালের শুরুর দিকে। ভিসি অফিসে আমার সাথে আরো কয়েকজন সহকর্মীর সাথে আলাপচারিতায় প্রসঙ্গ ক্রমেই বিষয়টি উঠে আসে। ও-ই বক্তব্যের রিভার্স মেসেজটা আমার বেশ কাজে লেগেছে। প্রফেসর সিদ্দিকের ইন্তেকালে নানা প্রতিক্রিয়া দেখতে পেলাম। একজন শিক্ষকের মৃত্যুতে এতো নেগেটিভ খবরের উতস হয়েছে দেখে কষ্ট পেয়েছি। বিশ্বব্যাপী শিক্ষকদের দায়িত্ব ও ক্ষমতার যে পরিসীমা তাতে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাই একজন শিক্ষকের পাওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক শিক্ষকের বেলায় এর উল্টোটা আমরা দেখছি। খুবই দুঃখজনক! যদিও এর নানাবিধ বাস্তবতা রয়েছে। ড. সিদ্দিক আমার সরাসরি ক্লাসরুম শিক্ষক ছিলেন না। কিন্তু ওনার কাছ থেকে আমি বেশ কিছু জিনিস শিখেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হিসেবে ভিসি আরেফিন সিদ্দিককে পেয়েছিলাম বছর খানেক। অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এর আগে ও পরে সাংবাদিক হিসেবে অবারিত এক্সেস ছিলো তাঁর কাছে- কি ফোনে, কি সরাসরি। ড. সিদ্দিকের সবচেয়ে বড় গুণ ছিলো, আমার অভিজ্ঞতায়, তাঁর interpersonal communication (ব্যক্তিগত যোগাযোগ) ক্ষমতা। একটা উদাহরণ এরকম, একজন ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আরেফিন সিদ্দিককে রাত ২টায় ফোন করলো। ভিসি ফোন ধরে জানতে চাইলেন কে, কেন ফোন দিয়েছেন। ওই ছাত্র পরিচয় দিয়ে বললো, স্যার, আপনার সাথে একটু কথা বলতে মন চাইলো, তাই ফোন করলাম। ভিসি হাসলেন এবং কথা শেষ করে ফোন রাখলেন।
এরকম ব্যক্তিগত যোগাযোগের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে ড. সিদ্দিকের। বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের বড় সমস্যা হলো কোন বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া। আমি নিজেসহ অনেকের কাছেই ড. আরেফিন সিদ্দিক ছিলেন আমাদের অন্যতম রিচ। একজন মানুষের অনেক দূর্বলতা যে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কাটিয়ে উঠা যায়, এর যথাযত প্রয়োগ আমি দেখতে পাই আরেফিন সিদ্দিকের মাঝে।
মানুষের যোগাযোগের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণের একটা অভ্যাসও ড. আরেফিন সিদ্দিককে দিয়েই আমি শুরু করি। সাত কলেজ, শিক্ষক নিয়োগে চরম দলীয়করণ, ও আওয়ামী তোষণ পাশে সরিয়ে রেখে ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিককে আমি শিক্ষক হিসেবেই শ্রদ্ধা করি!
আল্লাহপাক আপনাকে মাফ করে দিন।