
বরগুনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের বিচার চেয়ে মামলা করার ছয় দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তার বাবা। তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে নিজ বাড়ির পেছনের ঝোপ থেকে। নিহত ব্যক্তি বরগুনা পৌরশহরে একটি মুরগির দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তার স্বজনদের দাবি, ধর্ষণের মামলার জের ধরে অভিযুক্তের স্বজনরা প্রতিশোধ নিতে তাকে হত্যা করেছে।
বুধবার বরগুনা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি কড়ইতলা এলাকায় নিজ বাড়ির পেছন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয় এবং পরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ৫ মার্চ বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন তার বাবা। ওই মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত সৃজীব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান।
মঙ্গলবার রাতে নিহত ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তখন তিনি জানান, গাড়িতে আসা মুরগি দোকানে নামিয়ে বাসায় ফিরতে দেরি হবে। তবে অনেক রাত হলেও তিনি বাড়ি না ফেরায় আবারও ফোন করা হয়। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় এবং বাড়ির পেছনে রিংটোন শোনা গেলে সেখানে গিয়ে ঝোপঝাড়ের মধ্যে তার মরদেহ পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জেলে থাকায় তার স্বজনরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’ নিহতের বোন বলেন, ‘সন্ধ্যায় ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়। ভাই জানান, অভিযুক্তরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছে। আমি ভাইকে সাবধান থাকতে বলি। কিন্তু রাতে যখন শুনি ভাই বাড়ি ফেরেননি, তখন সেখানে গিয়ে দেখি ভাই মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।’
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হালিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গোপন তদন্ত শুরু হয়েছে এবং তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
এ ছাড়া বরগুনায় মিরাজ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওয়ালকার গ্রামে তার মরদেহ পাওয়া যায় গতকাল সকালে। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন ছিল। পুলিশ ধারণা করছে, পরিচিত কেউ তাকে বিলে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে।