Image description

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির কলাপাড়ার বসতঘরে আগুন দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ।


পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় শাহাদাত হাওলাদার (২২) এবং মাহফুজ মোল্লা (২১) নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার (৯ মার্চ) রাতে বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

তিনি বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনায় তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায়, বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ ও স্থানীয় তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে এবং মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের অবস্থান ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে পটুয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
 

গ্রেফতার শাহাদাত হাওলাদার বরগুনার আমতলী ইউনিয়নের মো. নসা হাওলাদারের ছেলে এবং মাহফুজ মোল্লা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব টিয়াখালী গ্রামের মো. হিরণ মোল্লার ছেলে। তারা বরিশালের একটি কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত শাহাদাত হাওলাদার ও মাহফুজ মোল্লা বরিশাল থেকে রাত ৮ টার দিকে বাসে বরগুনার আমতলী এলাকায় বান্দুরা স্ট্যান্ডে আসেন। সেখান থেকে তাদের পরিচিত একটি দোকান থেকে ৫০০ টাকার ডিজেল কিনে ভাড়া করা একটি মোটরসাইকেলে কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া এলাকায় গিয়ে কাফির বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেন। পরে সুবিধা মতো সময়ে রাতের অন্ধকারে কাফিদের বসতঘর ও রান্নাঘরের দেয়ালে, চালে, কাঠে ও টিনের বিভিন্ন জায়গায় ডিজেল ছিটিয়ে দেন। কেউ যাতে তাদের ধরতে না পারে এজন্য বাড়ির পেছনের দরজা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে।
 

শেষে শাহাদাতের সঙ্গে থাকা লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন এবং নিজেদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে স্থান ত্যাগ করেন। পরদিন সকালেই বাসে বরিশাল চলে যান তারা।
 

আনোয়ার জাহিদ জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো ইন্ধনদাতা, সহায়তাকারী বা অর্থযোগানদাতা যেই জড়িত থাকুক তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘরে বসবাসরত কাফির বাবা-মা, ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পেছনের দরজা ভেঙে বের হন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পরদিন নুরুজ্জামান কাফি বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা করেন।