Image description

বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে ভারতের শীর্ষ আদালতে করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি করতে অস্বীকার করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, অন্য একটি দেশের (অভ্যন্তরীণ) বিষয় নিয়ে তাঁরা শুনানিই করতে রাজি নন।

এই জনস্বার্থ মামলাটি এনেছিলেন পাঞ্জাবের লুধিয়ানার ভগবান জগন্নাথ রথযাত্রা মহোৎসব কমিটির চেয়ারপারসন রাজেশ ঢান্ডা। পাঞ্জাবি হিন্দু সমপ্রদায়ের এই প্রভাবশালী নেতা আবার ইস্কন মন্দির স্টিয়ারিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানও, যে সংগঠনের নেটওয়ার্ক বাংলাদেশেও আছে।

মামলায় দাবি করা হয়, বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতন ও হামলার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। এটা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারকে এই মর্মে যাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, সেই দাবিও জানানো হয় মামলাটিতে। মামলার আবেদনকারীর পক্ষে প্রধান আইনজীবী ছিলেন ভারতের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল তথা সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুকুল রোহাতগি।

তবে গত সোমবার মামলাটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এলে তাঁরা সরাসরি জানিয়ে দেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কিংবা প্রতিবেশী একটি দেশের ভেতরকার ঘটনা তাদের বিচার্য বিষয় হতে পারে না।

প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, এটা তো পররাষ্ট্রনীতিসংক্রান্ত বিষয়। এই আদালত কিভাবে অন্য একটি দেশের নিজস্ব বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারে? আমাদের সুপ্রিম কোর্ট যদি অন্য একটি দেশের ব্যাপারে, যারা আবার আমাদের প্রতিবেশীও, নাক গলায়, তাহলে সেটা খুবই অস্বাভাবিক জিনিস হবে!

এরপর বেঞ্চের পরামর্শে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুকুল রোহাতগি জনস্বার্থ মামলাটি প্রত্যাহার করতে রাজি হন।

প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ এরপর তাঁদের আদেশে বলেন, লার্নেড সিনিয়র কৌঁসুলি মুকুল রোহাতগি আবেদনকারীর তরফে বর্তমান রিট পিটিশনটি তুলে নেওয়ার অনুমতি চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে আবেদনকারী এরপর তাঁর দাবি নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ হতে পারেন।

খারিজ হয়ে যাওয়া মূল মামলায় আরো যে দাবিগুলো জানানো হয়েছিল তা ছিল এ রকম : ক. বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুদের ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের যে সময়সীমা আছে, তার মেয়াদ বাড়ানো হোক। খ. ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হোক, যাতে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতের দূতাবাস ও মিশনগুলোর মাধ্যমে তারা সে দেশের হিন্দুদের সহায়তা প্রদান করে। গ. প্রতিবেশী বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হোক, যাতে তারা সে দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। সূত্র : এনডিটিভি