
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ছিনতাই, ডাকাতি ও অতর্কিত হামলা কিংবা গুলিতে লোকজন আহত হওয়ার খবর মিলছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ ভয় ও আতঙ্ক নিয়েই দিনযাপন করছে। পুলিশ বলছে, শুধু রাজধানীতেই অপরাধের দুই শতাধিক ‘হটস্পট’ আছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত হটস্পটে সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হয়। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে এসব হটস্পটে দুই-তিন শিফটে টহল ও তদারকি কার্যক্রম বাড়ানোসহ গত ডিসেম্বরেই বেশ কিছু সুপারিশ করে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। তবে তা আমলে নিয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ অধিদপ্তর। এতে তদারকি না থাকায় হটস্পটগুলো ঘিরে অপরাধ কর্মকাণ্ড দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এদিকে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির জরুরি সভা হয়েছে। সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি বলব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। তবে এটার উন্নতি করার অবকাশ রয়ে গেছে। আগে কী হতো—যেমন বনশ্রীর ঘটনাটি জানতে জানতে দুদিন সময় লেগে যেত, এখন সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা জানা যায়। ছোটখাটো ঘটনা সবসময় আগেও ঘটেছে, দু-এক দিন আগেও ঘটেছে। তবে ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে, এজন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই না এ ধরনের একটি ঘটনাও ঘটুক।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কী নির্দেশনা দিয়েছেন জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে রাতেই (গতকাল রাত) আপনারা দেখবেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অ্যাক্টিভিটিস (কার্যক্রম) অনেক বেড়ে গেছে।’
ডিসেম্বরে এসবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অস্থায়ী ও ভাসমান মানুষের আধিক্য অপরাধ সংঘটন ও অপরাধ করে সহজে লুকিয়ে থাকার সুযোগ তৈরি করেছে। এ ছাড়া গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে গেছে। বিশেষ করে রাতে এবং ভোরের দিকে অপরাধ বেশি ঘটছে। বেশিরভাগ ঘটনা মানুষের চলাচলের রাস্তাঘাটে সংঘটিত হচ্ছে এবং ছিনতাইকারীরা দলবদ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। অনেক ঘটনায় ছিনতাইকারীরা মোবাইল ফোন,
টাকা-পয়সা এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে। এমনকি ভুক্তভোগীদের ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত বা হত্যা করছে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং সঠিক পুলিশি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজধানীতে অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করে এসবি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন শাহরিয়া আফরিন এ বিষয়ে কালবেলাকে বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ দায়ী। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় না হওয়া অন্যতম কারণ। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে রদবদলের ফলে পুলিশের কাঠামোগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেওয়া সরকারের বড় ভুল ছিল। তারা মুক্তি পেয়ে নিজ নিজ এলাকায় কিশোর গ্যাং ও ক্যাডারকে সক্রিয় করেছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।
যেসব অঞ্চল অপরাধের হটস্পট: শাহজাহানপুর ও মতিঝিল থানার অন্তর্গত ১১টি হটস্পটকে সবচেয়ে বেশি অপরাধপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এসবি। এগুলো হলো—কমলাপুর রেলস্টেশন, খিলগাঁও রেলগেট, ঝিলপাড়, শাহজাহানপুর পানির ট্যাঙ্ক, শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি, আরামবাগ, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার, মুধমতি সিনেমা হল, গোপীবাগ, ইত্তেফাক মোড় ও জীবন বীমা টাওয়ারের আশপাশ এলাকা।
এসবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাত্রাবাড়ী থানার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা ও জনপদ মোড় বেশ অপরাধপ্রবণ এলাকা। এ ছাড়া দোলাইরপাড় মোড় ও আশপাশ এলাকায়ও ছিনতাইকারী ও ডাকাতরা বেশ সক্রিয়। ডেমরা থানার স্টাফ কোয়ার্টার রোড এলাকা, কদমতলী থানার মেরাজনগর ব্লক-সি এবং তুষারধারা হারুন টাওয়ার গলিতে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি। পল্টন থানার বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, গোলাপশাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট ও গুলিস্তান বাসস্ট্যান্ড ছিনতাইয়ের হটস্পট। রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকা, মালিবাগ বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার, তালতলা মার্কেট, খিলগাঁও রেলক্রসিং এবং খিদমাহ হাসপাতাল এলাকা ছিনতাইয়ের অন্যতম হটস্পট। কোতোয়ালি ও বংশাল থানার বাবুবাজার ব্রিজের ঢাল, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের আশপাশ এলাকা, হাতিরঝিল থানার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, মগবাজার চারুলতা মার্কেট, মধুবাগ ব্রিজ এলাকা ও মাইটিভি ভবনের আশপাশ এলাকায় সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেশি। লালবাগ থানার শ্মশান, আরএনডি বেড়িবাঁধ সেকশন এলাকা এবং চকবাজার থানার সোয়ারীঘাট মাছের আড়ত এলাকায় চুরি-ছিনতাই যেন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার সাত মসজিদ রোডের ৯/এ, ৩/এ, ২/এ, রাপা প্লাজা এলাকা, শংকর বাসস্ট্যান্ড ও ধানমন্ডি মডেল ধানাধীন ৮নং রোড অপরাধপ্রবণ এলাকা। এসব এলাকায় সংঘটিত অপরাধের খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসে। হাজারীবাগ থানার বেড়িবাঁধ সংলঘ্ন কম্পানি ঘাট ও রয়েল টেনারি ভবন এলাকাকে হটস্পট বলছে পুলিশ। নিউমার্কেট থানার মিরপুর রোডের নূরজাহান মার্কেটের আশপাশ এলাকা, এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যানের সামনে এবং খিলক্ষেত থানার এয়ারপোর্ট গোলচত্বর ও আশপাশ এলাকা, কুড়িল ফ্লাইওভারের ওঠা-নামার স্থান ও আশপাশ এলাকায় চুরি-ছিনতাই বেশি হয়।
বাড্ডা থানার আফতাবনগর ও আশপাশ এলাকায় অপরাধ বেশি হচ্ছে। বনানী থানার মহাখালী আমতলী মোড়, চেয়ারম্যানবাড়ি মোড় ও কাকলি মোড়কে অপরাধের হটস্পট বলা হয়েছে পুলিশের প্রতিবেদনে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার দক্ষিণ বেগুনবাড়ি, তেজগাঁও গুলশান লিঙ্ক রোড, মহাখালী বাস টার্মিনাল এবং সাতরাস্তার মোড়। শেরেবাংলা নগর থানার পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠের উত্তর কোণে পুলিশ বক্সের বিপরীতে পাকা রাস্তা, গণভবন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও ফার্মগেট এলাকার সিজেন মোড়ের ফুট ওভারব্রিজ বেশি অপরাধপ্রবণ।
মোহাম্মদপুর থানায় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া দুজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারিয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার কলেজগেট অর্থাৎ গজনবী রোড, হুমায়ুন রোড, বাবর রোড, শাহজাহান রোডকে চুরি-ছিনতাইয়ের হটস্পট হিসেবে উল্লেখ করেছে এসবি। এ ছাড়া বছিলা ৪০ ফিট, বছিলা সিটি হাউজিং, বছিলা গার্ডেন সিটি, বছিলা ফিউচার টাউন, লালমাটিয়া, রায়ের বাজার ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় ব্যাপক মাত্রায় অপরাধীদের উৎপাত রয়েছে।
দারুস সালাম থানার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের ফাঁকা জায়গা, দ্বীপনগর বিজিবি মার্কেট এলাকা, সরকারি বাংলা কলেজ এলাকা, মিরপুর-১ ও গাবতলীতে চুরি-ছিনতাই বেশি হচ্ছে। শাহআলী থানার রাইন খোলা সংলগ্ন চিড়িয়াখানা রোড এবং কমার্স কলেজের সামনের রাস্তা ও আশপাশ এলাকায় অপরাধের মাত্রা বেশি। মিরপুর থানার মিরপুর-১০, সনি সিনেমা হল মোড় খুবই বিপজ্জনক। পল্লবী থানার কালশীর মোড়, ইস্টার্ন হাউজিং, পল্লবী জোন ও বাউনিয়া বাঁধ বাসস্ট্যান্ড ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য।
অপরাধ বাড়ার কারণ: পুলিশের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেশকিছু থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়াসহ লজিস্টিকস ঘাটতিতে স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। নতুন সরকারের অধীনে এখনো পুলিশের কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এই সীমাবদ্ধতা অপরাধীরা কাজে লাগাচ্ছে। এ সুযোগে কিশোর গ্যাং ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলো আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বেকারত্বের কারণে কিছু মানুষ অপরাধের পথে পা বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে রাতের শেষ ভাগে পুলিশের টহল কম থাকায় ছিনতাইকারীরা এ সময়কে টার্গেট করে অপরাধ করছে। অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও অপরাধীদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার তৎপরতায় ঘাটতি রয়েছে।
অপরাধ প্রতিরোধে করণীয়: চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনার পর ভিকটিমকে দ্রুততম সময়ে নিকটস্থ থানা বা ফাঁড়িতে অভিযোগ করার জন্য উৎসাহিত করতে বলেছে এসবি। পূর্ববর্তী মামলাগুলোর তথ্য নিয়ে একটি সমৃদ্ধ ডাটাবেজ তৈরির পরামর্শ দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থানা ও এলাকাভিত্তিক হটস্পটগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে সেই এলাকাগুলোতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, নৌবন্দর এবং বিমানবন্দরে যাত্রীদের যাতায়াতের সময় এবং রুট বিবেচনা করে কার্যকর পুলিশ টহল বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এসবি। রাতের টহল কার্যক্রম ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে তা দুই শিফটে ভাগ করতে হবে। একটি শিফট চলবে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। অন্যটি রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত। ভোরবেলা যাতায়াতকারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাসস্ট্যান্ড ও নৌবন্দরে বাস ও নৌ মালিকদের সহায়তায় পর্যাপ্ত আনসার বা স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতে হবে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার কার্যক্রম জোরদার করলে সুফল মিলবে বলে মনে করে পুলিশের বিশেষ শাখা।
এর পাশাপাশি সমন্বয়মূলক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়ে এসবির প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ এবং প্রয়োজনে স্থানীয় বাসাবাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের ভিডিও ফুটেজ থেকে সহায়তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় ধৃত আসামিদের ফেসিয়াল আইডেন্টিফিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করার কথা বলা হয়। এ ছাড়া চিহ্নিত চোর ও ছিনতাইকারীরা যাতে সহজে জামিন না পায়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধন এবং প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে কোর্ট পুলিশ, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং এপিপিদের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় সভা আয়োজনের সুপারিশ করা হয়।
এ ছাড়া অপরাধ প্রতিরোধে হটস্পট এলাকাগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন এবং অভিযান পরিচালনা; পুরোনো বা চোরাই মোবাইলের বিক্রয়স্থল চিহ্নিত করে সেখানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা; মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের সফটওয়্যার আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও ব্যবহারকারী শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশও দেওয়া হয় প্রতিবেদনে।
জানা গেছে, এসবির এসব সুপারিশ গুরুত্ব সহকারে নেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ অধিদপ্তর। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলছেন, স্বরাষ্ট্রের দায়িত্বশীলরা এসবিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে আইনশৃঙ্খলা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকত।
অবশ্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম দেশবাসীকে ‘একটু অপেক্ষা’ করতে বলেছেন। সরকারের ‘অ্যাকশন’ শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পতিত আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সফল হবে না। আমরা কঠোর পদক্ষেপে যাচ্ছি।’
এদিকে, গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটির সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির খুব দ্রুত দৃশ্যমান উন্নতি হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব উন্নতি করা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। আমরা এ কাজটি সুচারুভাবে করতে চাই।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন কি না—এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সিরিয়াসলি নিচ্ছে বলেই আজকের মিটিংটা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যে এজেন্সিগুলো কাজ করে, তারা সবাই এখানে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, অপরাধ সংঘটিত হলে যানজটের কারণে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যেতে পারে না। এজন্য তারা যেন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে, সেজন্য প্রচুর পরিমাণে মোটরসাইকেল কেনা হবে। তারা মোটরসাইকেল চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছবেন।