Image description
 

রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িয়ে মামলা করা হয়েছে মর্মে রায়ের পর্যবেক্ষণ বলেছেন আদালত।

আজ বুধবার এই মামলার খালাসের রায়ে ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।

এদিন বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে রায় ঘোষণা করতে বিচারক এজলাসে ওঠেন। বিচারক বলেন, প্রশ্ন হতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কিভাবে আসামির আত্মপক্ষ শুনানি করা হয়েছে। ডিএলআর-এর পাতা ১৭ থেকে ২১ পাতায় এ বিষয়ে বলা আছে। 

তিনি বলেন, কোনো আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরায় থাকলে তার অনুপস্থিতিতে আত্মপক্ষ শুনানি করা যায়। আবার রায়ও দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া হচ্ছে।

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। যেহেতু সেই মামলা চলে নাই, তবুও এ মামলার ফুল ট্রায়াল হয়েছে। আসামি সেলিম ভূঁইয়ার এই মামলায় একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে। জবানবন্দির আগে তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে তিনি তা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। সেখানেও বলেছেন তাকে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।

মামলা তেজগাঁও থানার। কিন্তু তাকে রাখা হয় গুলশান থানায়। সেখানে নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ এটা ডিনাই করছে। তাদের এটা জানাও নাই। রেকর্ডে দেখা গেছে, তাকে যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বর্হিবিভাগের টিকিটও আছে। তাকে বাইরে থেকে ওষুধও কিনে দেওয়া হয় এর রশিদও আছে।

তিনি বলেন, ‘সেলিম ভূঁইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে ফোর্সফুলি ১৬৪ ধারার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।সে কারণে এই ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ট্রু বলার সুযোগ নাই। এর উদ্দেশ্য হলো গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের জড়িত করার জন্য জোরপূর্বক এই জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বুঝা যায়, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করে এই মামলা করা হয়েছে। তাই সকল আসামিকে বেকসুর খালাসের রায় ঘোষণা করা হলো।’

এদিকে মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। জামিনে থাকা অপর আসামিরা আদালতে হাজির হন।

এদিন সব আসামি খালাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।