Image description

বিদেশি এক রাষ্ট্রদূত উপহার নিয়ে দেখা করে সরকার গঠনের জন্য আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে জানালেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে দলটির ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মশালা ও প্রতিনিধি সভায় তিনি একথা জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত সিটি করপোরেশনে এসে আমার সঙ্গে দেখা করলেন। তিনি আগে কখনো উপহার আনেননি। এবার বিশাল এক উপঢৌকন নিয়ে হাজির হলেন। আমাকে বললেন- আপনারা সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন, অগ্রিম অভিনন্দন। অর্থাৎ তাদের (বিদেশি রাষ্ট্রদূত) কাছে মেসেজ চলে গেছে।’

বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন আপনাদের কাজ হচ্ছে- যারা অন্য দল থেকে এখন আমাদের দলে ভিড়ে অপকর্ম করছে, তাদের ত্যাগ করা। তাদের তো আমাদের দরকার নেই। আমরা এদের ছাড়া সবকিছু পারি এবং পেরেছিও। গত ১৬ বছর তো করেছি, তখন তো ছিল না। তাই তাদের বাদ দিয়ে আমাদের গড়তে হবে।’

‘কিন্তু যারা আমাদের সাপোর্ট করতেন, কিন্তু সামনে আসতে ভয় পেতেন, তারা তো আমাদের সঙ্গে আছেন। তারা হয়তো মাঠে ময়দানে ছিলেন না, কিন্তু আন্তরিকভাবে, সার্বিকভাবে, অর্থ দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছেন। তারা হয়তো রাজপথে মিছিল করতে পারেননি, কিন্তু সাহস যুগিয়েছেন। তারা যেহেতু আমাদের সঙ্গে আছেন, তারাই আমাদের সম্পদ। তারাই কিন্তু আমাদের ভোট দেবে।’

মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘বিএনপির ভোটাররা কিন্তু আওয়ামী লীগের ভোটারদের মতো মিছিল মিটিংয়ে সর্বাত্মক অংশ নেয় এরকম নয়। বিএনপির মিছিল করবে এক গ্রুপ, আর অন্যদিকে ভোটাররা নীরবে ভোট দেবেন। এটা আপনারা সবাই জানেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রসংস্কার শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই শুরু হয়েছে। তিনি ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন এবং এটা নিয়ে বিশাল পরিকল্পনা উপহার দিয়েছিলেন। পরে বেগম খালেদা জিয়া এবং এখন তারেক রহমান রাষ্ট্রযন্ত্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে কিন্তু সমাজ সংস্কার, নগর সংস্কার, ওয়ার্ড সংস্কার, থানা সংস্কার, জাতি সংস্কার এবং রাষ্ট্র সংস্কারসহ সবধরনের সংস্কার রয়েছে।’

বাকলিয়া এলাকা বিএনপির ঘাঁটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড আমার নিজের এলাকা। এটি বিএনপির উর্বর ওয়ার্ড। মনজুর আলম যখন ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচন করেন, তখন আমি ১৭, ১৮ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সমন্বয়কারী ছিলাম। সেই ওয়ার্ডগুলো মনজু সাহেবকে লিড দিয়েছে ২০ হাজার ভোটে। এ তিন ওয়ার্ডে ভোট আছে এক লাখের বেশি। তাই এ তিন ওয়ার্ডে যদি লিড নেওয়া যায়, তাহলে অন্য ওয়ার্ডে হারলেও সমস্যা নেই। সংসদীয় আসনে এভাবেই আব্দুল্লাহ আল নোমান ভাই এখানে জিতেছেন।’

সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে নাজিমুর রহমান বলেন, ‘দেশের জনগণ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন গণতন্ত্র, সুশাসন ও মৌলিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই জাতীয় নির্বাচনই হবে জনগণের প্রতিনিধি নির্ধারণের একমাত্র পথ। বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তাই সংগঠনকে শক্তিশালী করে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে।’

নগরীর বাকলিয়া এক্সেস রোডস্থ একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সেকান্দর। সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. এমরান উদ্দিনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- নগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহবায়ক হারুন জামান ও শওকত আজম খাজা।

সারাবাংলা