Image description
► নতুন নারী ভোটার ১৬ লাখ ► মৃত ভোটার বাদ ১৫ লাখ ২৩ হাজার

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে প্রায় ৫০ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া  বিদ্যমান তালিকার ১৫ লাখ ২৩ হাজার মৃত ভোটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব বলেন, এবারের হালনাগাদে ৪৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৮ জন ভোটার যুক্ত হতে যাচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য ছিল ৬১ লাখের কিছু বেশি ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা। বিদ্যমান ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ১৫ লাখ ২৩ হাজার। ভোটার বৃদ্ধি ১.৭৭ শতাংশ। মোট বৃদ্ধি ৩.৯ শতাংশের মধ্যে বাদ পড়াদের বৃদ্ধির হার ২.৪৪ শতাংশ এবং নতুন ভোটার বৃদ্ধির হার ১.৪৬ শতাংশ।

নারী ভোটার প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, এবার ১৬ লাখ নারী ভোটার হতে তথ্য দিয়েছে। চলমান হালনাগাদ কর্মসূচিতে যারা বাদ পড়েছে তাঁদেরও যুক্ত করা হবে তালিকায়। নিবন্ধন চলবে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। এ ছাড়া অনলাইন আর আঞ্চলিক কার‌্যালয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্যরা নিবন্ধন করতে পারবে। তবে কোনো তথ্য সংগ্রহকারী কোনো বাড়িতে না গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে ইসি। গত সোমবার পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। কার্যক্রমের আওতায় ভোটারদের নাম-ঠিকানাসহ প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ বুধবার থেকে শুরু হবে ছবি তোলা, আঙুলে ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি গ্রহণের কাজ, যা চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন গ্রহণ করা হবে। এরপর নতুন হালনাগাদ করা সব তথ্য ৫ মের মধ্যে সার্ভারে আপলোড করা হবে।

ইসি সচিব আরো বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৭ বছরের কেউ ভোটার হয়েছে কি না এমন তথ্য নেই ইসির কাছে। তবে নির্দিষ্ট করে কেউ জানালে কমিশন বিষয়টি দেখবে।

এর আগে গত বছরের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল ইসি। বর্তমানে দেশে মোট ভোটার ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৭ জন এবং নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ চার হাজার ৬৪১ জন। আর হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৩২ জন। এ তালিকা প্রণয়নে ২০২৩ সালে করা হালনাগাদে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছিল।

ভোটার নিবন্ধন আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, এবং দাবি-আপত্তির নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত তালিকা ২ মার্চ প্রকাশ করা হয়। সে হিসাবে চলতি বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা নতুন ভোটার তালিকায় সন্নিবেশিত করে ২০২৬ সালের ২ মার্চ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ওই সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করেন। এরপর নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত তালিকা থেকে সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ এম এম নাসির উদ্দীন নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফলে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার ন্যস্ত হয় নতুন এই নির্বাচন কমিশনের ওপর। দায়িত্ব নেওয়ার পর আশু উদ্যোগ হিসেবে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বর্তমান কমিশন নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।