
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সারাদেশে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। তবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত তালিকায় কারা মনোনীত হবেন- সেটা দলটির নেতারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে প্রাথমিক মনোনয়নে মনোনীত হননি ময়মনসিংহ-৬ আসনের (ফুলবাড়িয়া) জামায়াত নেতা অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিন।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলও করেছেন জসিম উদ্দিনের সমর্থকরা। তাদের দাবি, জামায়াত যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তার চেয়ে বেশি যোগ্য অধ্যাপক জসিম উদ্দিন। কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দিয়েছে তাকে ফুলবাড়িয়াবাসী চেনেন না। ফুলবাড়িয়ায় জসিম উদ্দিনের বিকল্প কেউ নেই।
এ প্রসঙ্গে আমার দেশের সঙ্গে কথা হয় এই জামায়াত নেতার। তিনি বলেন, জামায়াত জনগণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং জনগণ যাদের ভোট দেবে, তাদের স্বপক্ষে জামায়াত সিদ্ধান্ত নেবে বলেও মনে করেন দলটির সিনিয়র নেতা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান আসাদের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক শূরা সদস্য ও সাবেক ময়মনসিংহ জেলা আমির অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
সাংবাদিক: কেমন আছেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ ভালো রেখেছেন।
সাংবাদিক: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না? আপনি কী মনে করছেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি আশা করছি, সামগ্রিক যে রাজনৈতিক পরিবেশ আছে, তাতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক: আপনাকে মনোনয়ন দিলে আপনি কি বিজয়ী হতে পারবেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: ইনশাআল্লাহ, এই অঞ্চলের মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, সেই অনুযায়ী যে পালস বা জনমত আছে, তাতে আশা করা যায় যে জামায়াতে ইসলামী থেকে আমরা নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবো, ইনশাআল্লাহ। অতীতেও নির্বাচন হয়েছে; আমরা ১৯৯১ সালে নির্বাচন করেছি, ১৯৯৬ সালে নির্বাচন করেছি, ২০০১ সালে জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছি। সামান্য অল্প ভোটের ব্যবধানে বরাবরই অন্যরা আমাদের কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা আশা করি, এবার মানুষ যেভাবে ঐক্যবদ্ধ এবং সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর যে ইমেজ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অবশ্যই আমরা আশা করতে পারি যে ফুলবাড়ীয়া থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা বিজয়ী হব, ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক: দলের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাকে সমর্থন না দিলে কী করবেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: জনগণের কাছ থেকে ম্যান্ডেট নেওয়ার পরে জরিপের প্রেক্ষিতে যদি এখানে সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে আমি দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি, দলের পক্ষ থেকে জনমতের (জনগণের) দিকে তাকিয়ে দল থেকে আমি নমিনেশন পাবো, ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক: আপনাকে সমর্থন দিলে আগের প্রার্থীর সমর্থকেরা যদি ভোট না দেন, তাহলে জিতবেন কীভাবে? কারণ তারও তো একটা সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: না, দলের পক্ষ থেকে যখন আমরা মনোনীত হবো, তখন সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই আসন তুলে আনার জন্য সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাবো, ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক: একটি ইসলামী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: জামায়াতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া তো আমরা কাম্য মনে করি না, আর জামায়াত জনগণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও কোনো ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং জনগণ যাদের ভোট দেবে, তাদের স্বপক্ষে জামায়াত সিদ্ধান্ত নেবে—এটাই স্বাভাবিক এবং আল্লাহর কাছে সেভাবেই কামনা করি।
সাংবাদিক: জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ঐ রকম সুযোগ-সুবিধা আছে কি?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: এই ধরনের প্রশ্ন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সংগঠনের পক্ষ থেকে যেহেতু আমরা নির্বাচন করবো আশা করছি, সে ধরনের প্রশ্নের উত্তর বলার প্রয়োজন নেই।
সাংবাদিক: আপনাকে দল সমর্থন দিলে এবং আপনি বিজয়ী হলে আপনি কী কী পদক্ষেপ নেবেন?
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: দেখুন, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তো একটা নির্বাচনী মেনিফেস্টো অলরেডি ঘোষণা করা হবে, তৈরি হচ্ছে। আমরা ঐ মেনিফেস্টোকে সামনে রেখে ফুলবাড়ীয়া এলাকার বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে ফুলবাড়ীয়ার আপামর জনসাধারণের উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সব কিছুর ব্যাপারে, চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করা, মাদকদ্রব্য/নেশা থেকে ছেলেমেয়েদেরকে রক্ষা করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সকল ধরনের উন্নয়নের জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ।
সাংবাদিক: আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক জসিম উদ্দিন: আপনাকেও ধন্যবাদ।