Image description

ভারতের ঝাড়খণ্ডের একটি সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের রক্ত নেওয়ার পর পাঁচ শিশুর এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত থাকার কারণে তাদের নিয়মিত রক্ত নিতে হয়।

ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলার সরকারি সদর হাসপাতালের এই ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। খবর বিবিসি বাংলার।

পশ্চিম সিংভূমের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার জানান, ওই হাসপাতাল থেকে রক্ত নেওয়ার ফলে আট বছরের কম বয়সী ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত পাঁচটি শিশু এখন এইচআইভি পজিটিভ হয়ে পড়েছে।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সেখানকার সিভিল সার্জন, এইচআইভি ইউনিট-এর দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এই ঘটনায় ভুক্তভুগী পরিবারদের দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে দুইজনের মায়ের কেউই তাদের সন্তানের এইচআইভি সংক্রমিত হয়ে পড়ার বিষয়ে কিছু জানতেন না। হাসপাতালে ডাক্তার এবং নার্সদের আচরণে পরিবর্তনেই তাদের সন্দেহ হয় যে, তাদের সন্তানরা কোনো গুরুতর রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পরে স্বজনদের উদ্যোগে পরীক্ষায় এইচআইভি পজিটিভি আসে।

এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত কোথা থেকে এল, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে, এই জেলায় মোট ২৫৯ জন দাতা রক্তদান করেছেন। এর মধ্যে ৪৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে চারজন দাতা এইচআইভি পজিটিভ বলে নিশ্চিত করা গিয়েছে।

বাকিদের সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে অন্য কোনো দাতা এইচআইভি পজিটিভ হলে তাদের শনাক্ত করা যায়।

এই শিশুদের এইচআইভি সংক্রমিত হয়ে পড়ার জন্য দায়ী কে, এমন প্রশ্নে ঝাড়খণ্ডের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামচন্দ্র চন্দ্রবংশী বলেন, এই মামলায় সিভিল সার্জন এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবহেলা রয়েছে, তাই তারাই দোষী।

ঝাড়খণ্ডের বিশেষ স্বাস্থ্য সচিব ডা. নেহা অরোরা জানান, বিষয়টা এখনো তদন্তাধীন।

দাতার রক্ত পরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, পরীক্ষার জন্য প্রি-কিট ব্যবহার করা হলে উইন্ডো পিরিয়ড বড় হয় এবং রোগী (এইচআইভি) পজিটিভ কি না তা দেরিতে জানা যায়। অন্যদিকে, এলিসা বা এনএটি টেস্টের ক্ষেত্রে ভাইরাস দ্রুত ধরা পড়ে, কারণ তারা অ্যান্টিজেনগুলো শনাক্ত করতে পারে। তাই এখন ডোনারদের পরীক্ষার জন্য প্রি-কিট ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্যের ৯টি ব্লাড ব্যাংকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সেখানে কাজ চলছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরফান আনসারি বলেন, লাইসেন্স নবায়নের এনওসি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায়। না দিলে আমরা কী করে রিনিউ করব? আমরা ফাইলটা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি।