Image description

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আমার প্রিয় বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিসরের শার্ম আল-শেখ শান্তি সম্মেলনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।

জানা গেছে, পাকিস্তানি সেনাপ্রধান সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তা সত্ত্বেও শেহবাজ শরিফকে বক্তৃতা মঞ্চে ডাকার আগে মুনিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন ট্রাম্প। গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকার জন্য এই দুই নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

বক্তব্য রাখার জন্য শরিফকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং আমি অবশ্যই বলতে পারি যে পাকিস্তান থেকে আমার প্রিয় হলেন ফিল্ড মার্শাল... তিনি এখানে নেই, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখানে আছেন।’ সম্প্রতি হোয়াইট হাউজে শরিফ ও মুনিরের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। সেই সময়েও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের প্রশংসা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, গাজায় শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টায় শেহবাজ শরিফসহ বিশ্বনেতাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

মঞ্চে উঠে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে তাদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। কারণ নিরলস প্রচেষ্টার পর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যিকারের একজন শান্তির মানুষ, যিনি দিনরাত এক করে এই পৃথিবীকে শান্তি ও সমৃদ্ধির স্থান বানানোর জন্য কাজ করেছেন।’

শাহবাজ আরও বলেন, “আমি বলতে চাই, পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল। কারণ তিনি প্রথমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করেছিলেন। তার অসাধারণ টিমের সঙ্গে মিলে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিলেন। আজ আবারও আমি তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে চাই। কারণ আমি মনে করি তিনি সবচেয়ে যোগ্য ও অসাধারণ প্রার্থী। তিনি শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি আনেননি, কোটি মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন। আর আজ শার্ম আল-শেখে গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন।’

তিনি ট্রাম্পের “অসাধারণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের” প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি কাতারের আমিরসহ তুরস্ক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতির জন্য বহুবার নিজেই নিজেকে কৃতিত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প। গাজার শান্তিচুক্তি মঞ্চেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গাজা শান্তি সম্মেলনে ফের একবার নিজের ‘প্রশংসা’ করতে শোনা যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। সেই সময় ভারত-পাক সংঘাত থামানোর বিষয়টি উত্থাপন করেন তিনি।

শাহবাজ বলেন, ‘যদি ট্রাম্প না থাকতেন, তাহলে কে জানে—ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তার অসাধারণ টিমসহ চার দিনের মধ্যস্থতা না থাকলে যুদ্ধ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারত, যার পরিণতি কেউ বেঁচে থেকে বলতে পারত না।’

এরপর আবার মঞ্চে উঠে ট্রাম্প মজা করে বলেন, ‘ওয়াও! আমি এটা আশা করিনি। চলুন, বাড়ি যাই, আর কিছু বলার নেই। সবাইকে বিদায়। দারুণ ছিল, অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত, অনেক ধন্যবাদ।’