Image description
 

বাংলাদেশ, নেপালের পর এবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ভারতে। আলাদা রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এমনকি রাজ্যের রাজধানী লেহতে অবস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দলীয় কার্যালয় ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম। এছাড়াও ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

 

আন্দোলনকারীরা বিজেপি কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলের দপ্তরে ইটপাটকেল ছুড়ে মারার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, শহরজুড়ে মোতায়েনকৃত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।

 

যুবকদের কয়েকটি দল একটি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িসহ আরও কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিজেপি কার্যালয়কে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তারা ভবনের ভেতরের আসবাবপত্র ও নথিপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়, পাশাপাশি একটি ভবনে আগুন লাগায়।

পিটিআই জানিয়েছে, লাদাখ অ্যাপেক্স বডির (এলএবি) যুব শাখা গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের অনশন ধর্মঘটের ডাক দেয়। ওই ধর্মঘট চলাকালে ১৫ জনের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এ ঘটনাই যুব শাখাকে বিক্ষোভ ও হরতালের ডাক দিতে প্ররোচিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দর গুপ্ত বলেছেন, রাজ্যে হওয়া বিক্ষোভের পেছনে ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ’ পাওয়া যাচ্ছে। কারণ বিক্ষোভে ‘মানুষকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা’ করা হয়েছে। তিনি এই বিক্ষোভকে বাংলাদেশ ও নেপালের বিক্ষোভের সঙ্গেও তুলনা করেছেন।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে গুপ্ত বলেন, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিবাদ করা মানুষের অধিকার। তবে সেটা শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া দরকার। গত দুই দিন ধরে মানুষকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, আর এখানে হওয়া বিক্ষোভকে বাংলাদেশ ও নেপালের বিক্ষোভের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এর পেছনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’

গুপ্ত আরও বলেন, যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নিত, তবে বিক্ষোভের ভয়াবহ প্রভাব পড়ত।

তিনি জানান, ‘আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ মোতায়েন করা হলে একট ক্রিপিএফ গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। বিক্ষোভ চলাকালে ডিরেক্টর জেনারেলের গাড়িতে পাথর মারা হয়। যদি এই বিক্ষোভ থামানো না হতো, তবে এই মানুষগুলো (বিক্ষোভকারী) গোটা লেহ শহরই ধ্বংস করে ফেলত।’

লাদাখের মানুষ বহুদিন ধরে দাবি করে আসছেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিকে ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার। সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অনুচ্ছেদ ২৪৪(২) ও ২৭৫(১) রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের আদিবাসী এলাকার প্রশাসন সম্পর্কিত বিধান।

এদিকে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার পর থেকে লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীরের জন্য রাজ্যের মর্যাদার দাবিও জোরালো হয়েছে।