
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ইসরায়েলের জন্য আন্তর্জাতিক সতর্ক সংকেত দিয়েছে সৌদি আরব ও ফ্রান্স। জাতিসংঘে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, স্বাধীন ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন বা জমি দখলের যে কোনো চেষ্টা ‘রেড লাইন’ অতিক্রম হিসেবে গণ্য হবে এবং এক ইঞ্চিও দখল মানা হবে না।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, সান মারিনো ও অ্যান্ডোরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এর আগে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও পর্তুগালও একই ঘোষণা করেছিল।
সম্মেলন শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে সৌদি আরব ও ফ্রান্স বলেছে, ইসরায়েল যদি এই রেড লাইন অতিক্রম করে, তবে বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তিগুলি সরাসরি হুমকির মুখে পড়বে। গাজায় চলমান যুদ্ধে নিরীহ বেসামরিক মানুষ এবং জিম্মিদের উপর যে মানবিক ক্ষতি হচ্ছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
দুটি দেশ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, বন্দি মুক্তি, মানবিক সহায়তার পূর্ণ প্রবেশাধিকার এবং ফিলিস্তিন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করেছে। পাশাপাশি তারা ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
বিবৃতিতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে একীভূত করার গুরুত্ব জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। হামাসকে গাজা শাসন থেকে সরে গিয়ে অস্ত্র জমা দিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ নিতে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের অঙ্গীকারকেও স্বাগত জানানো হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, ফিলিস্তিন হবে শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ প্রত্যাখ্যান করবে, কোনও গোষ্ঠীকে সামরিকীকরণ করবে না এবং সবার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এছাড়া শিক্ষাখাতে সংস্কার, ‘পে-টু-স্লে’ ভাতার বাতিল এবং এক বছরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতিকেও প্রশংসা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সতর্ক করা হয়েছে, এখনই সময় দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়ার এবং বসতি স্থাপন ও সহিংসতা বন্ধ করার। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের যুক্তি, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হামাসকে পুরস্কৃত করবে এবং বাকি জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ শেষের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে।