
মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও যাত্রীবাহী ডাবল-ডেকার বাসের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরো ৪১ জন।
স্থানীয় সময় সকাল ৭টার কিছু আগে রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে শিল্পাঞ্চল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও তিনজন পুরুষ বলে নিশ্চিত করেছে অ্যাটর্নি জেনারেলস অফিস।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ডাবল-ডেকার বাসটি ট্রেনলাইন অতিক্রমের সময় রাস্তার যানজটে আটকে ছিল। এমন সময় দ্রুতগামী ট্রেনটি বাসের মাঝ বরাবর ধাক্কা দিলে বাসটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ট্রেনের ধাক্কায় বাসটির একটি অংশ রেললাইন বরাবর অনেকদূর টেনে নিয়ে যায়, আর অন্য অংশটি লাইনের পাশে থেমে যায়।
এলাকার এক স্থানীয় ব্যক্তি মিগুয়েল সানচেজ জানান, ‘আমরা ট্রেনের হুইসেল শুনেছিলাম। তারপর একটা প্রচণ্ড শব্দ। প্রথমে ভাবছিলাম কোনো গাড়ির সংঘর্ষ হয়েছে। পরে বুঝতে পারি এটা একটা বাস, যার ভেতরে অনেক মানুষ ছিল।
মেক্সিকো রাজ্যের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বাসটি হেরাডুরা দে প্লাতা নামক একটি যাত্রী পরিবহন কম্পানির মালিকানাধীন ছিল। দুর্ঘটনায় বাসটির উপরের ছাদ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কম্পানিটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই কানাডিয়ান প্যাসিফিক কানসাস সিটি অব মেক্সিকো ট্রেন কম্পানি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। তারা রেল ক্রসিংয়ে সাইন ও নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মেক্সিকোর রেল পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশজুড়ে রেলক্রসিংয়ে মোট ৮০০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬০২। গত মাসেও গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় ছয়জন প্রাণ হারান। ২০১৯ সালে কেরেতারো রাজ্যে একই ধরনের একটি দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত হন।
সূত্র : স্কাই নিউজ