
অনিয়মের অভিযোগ জানাতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিনেট ভবনের অভিযোগপত্র নিয়ে যান তিনি।
এর আগে, এদিন সকাল ১০টার কিছু আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ভোটকেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ভোটটা উদযাপন করতে চাই। অভিযোগ করতে চাই না।’ শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ম ভেঙে প্রবেশের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই ঢুকেছি।’
তিনি বলেন, ‘ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কিন্তু জিএস, এজিএস হিসেবে প্যানেলের প্রধান হিসেবে যেটুকু অ্যাকসেস প্রয়োজন ছিল তা আমরা পাইনি বলে বলে মনে হচ্ছে।’
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভিপি প্রার্থী। যে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি নিজে কিন্তু ভোট চাচ্ছেন। আমি প্রার্থী হিসেবে সবগুলো কেন্দ্রে তো আসবো, দেখবো। শিক্ষার্থীরা আছেন, সালাম দেওয়া-একুটু তো বিনিময় তো স্বাভাবিক ব্যাপার।’
আপনাদের প্রার্থী লিফলেট দিয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালেও ডাকসু নির্বাচন করেছি। দেখেন, প্যানেলের যে নম্বরগুলো, ব্যালট নম্বর, ৪১টা ব্যালট নম্বর মনে রাখা সত্যিকার অর্থে কঠিন। হয়তো অনেক শিক্ষার্থী এটা না নিয়েও আসতে পারে, সেজন্য শুধু ব্যালট নম্বটা এখানে রাখা হয়েছে।’
১০০ মিটারের মধ্য প্রচারণা চালাতে নিষেধ করে মাইকিং করা হচ্ছে এ বিষয়ে সাংবাদিকে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রাশসনের তাহলে উচিত অন্যান্য সব প্রার্থীদেরও এখানে না আসতে দেওয়া। ভিপি প্রার্থী হিসেবে সব কেন্দ্রে ভোট ঠিকভাবে চলছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব কি আমার নয় ? কেন্দ্রগুলোতেও আমার প্রবেশাধিকার পাওয়ার কথা ছিল। রোকেয়া হল, টিএসসি কেন্দ্রেরটা এখন পর্যন্ত আমি পাইনি। উদয়নে পাচ্ছি না। আমাদের কোনো আইডি কার্ডও নেই। অভিযোগ দিলে আমারও প্রচুর অভিযোগ দিতে পারি। আমরা ভোটটা উদযাপন করতে চাচ্ছি, দ্যাটস অল। এ জন্য অভিযোগ থেকে দূরে থাকতে চাচ্ছি। চেষ্টা করছি, প্রকাশ্যে কোনো অভিযোগ না করে এগুলো মিটিয়ে নেওয়া যায় কিনা। আমরা চাচ্ছি না, রাজনৈতিক অপস্কৃতিগুলো আবার ফিরো আসুক।’
প্রয়োজনের তুলনায় পোলিং এজেন্ড অনেক কম এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা নির্বাচন কমিশন তাদের যথাযথ বয়ান প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। অভিযোগ করলে অনেক করা যায়, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’
এদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ৮টি কেন্দ্র ও ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কার্জন হলে ভোট দিচ্ছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা। সিনেট ভবনে ভোট দিচ্ছেন স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা।
উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদদীন হলের শিক্ষার্থীরা। ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এবং ইউল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা।
এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ভিপি পদে লড়ছেন ৪৫ জন। সর্বশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৬৩৯ জন।