Image description
 

নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। এর মধ্যে রাজধানী কাঠমান্ডুতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইতাহারীতে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিবিসির।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, কাঠমান্ডু ভ্যালি পুলিশ কার্যালয়ের মুখপাত্র শেখর খানাল নিশ্চিত করেছেন, সমাবেশ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, ‘কিছু এলাকায় এখনও বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষ থামেনি।’

বাড়ছে উত্তেজনা, রাজধানীতে কারফিউ

 

‘জেন জি’ খ্যাত তরুণ ও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার বিকেল থেকে কাঠমান্ডু, পোখরা, বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া এবং ইতাহারীসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে কারফিউ ঘোষণার পরও কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

 
 

হাসপাতালগুলোতে মরদেহ আর আহতদের ভিড়

 

সংঘর্ষে নিহতদের মরদেহ রাখা হয়েছে নিউ বানেশ্বরের সিভিল সার্ভিস হাসপাতাল ও এভারেস্ট হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেক মরদেহেই গুলির ক্ষত স্পষ্ট। সিভিল হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর দীপক পাউডেল বলেন, ‘বেশিরভাগ আহতের শরীরে গুলি লেগেছে।’

এদিকে জাতীয় ট্রমা সেন্টারে সবচেয়ে বেশি মৃতদেহ রাখা হয়েছে। কেন্দ্রটির প্রধান সুপারিনটেন্ডেন্ট ডা. বদরি রিজাল জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সিনামঙ্গলের কেএমসি টিচিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজনও মারা গেছেন।

কাঠমান্ডুর তিনটি হাসপাতালে এখনও একশর বেশি আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরও অন্তত ৪৫ জন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।

পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?

নেপালজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে পুলিশের প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। প্রতিদিনই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, হাসপাতালে আহতদের দীর্ঘ তালিকা তৈরি হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যদি তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ ও দাবি গুরুত্বের সঙ্গে না নেয়, তবে এই আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে। কারফিউ ও দমননীতি হয়তো সাময়িক নিয়ন্ত্রণ আনবে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে দেশকে অনিশ্চিত রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে।