
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ। যেখানে অংশ নেবে ১০ হাজার সেনা। সঙ্গে থাকবে ড্রোন ও ‘রোবেটিক সেনা’রাও। এক হাজারের বেশি সংগীতশিল্পীকে সাজানো হবে ১৪টি সারিতে। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি এবং জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই মহাপ্যারেড হবে চীনের শক্তি প্রদর্শনীর মঞ্চ। শুধু সামরিক শক্তির প্রদর্শনীই নয়, এই আয়োজনকে ঘিরে চীন নিজেকে হাজির করতে চলেছে পশ্চিম-নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প কেন্দ্র হিসাবেও। প্যারেডে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার নেতাসহ পশ্চিমাবিরোধী রাষ্ট্রনেতারা। যার সামরিক প্রদর্শনীতে লুকানো ভবিষ্যৎ সংঘর্ষের অঘোষিত ইঙ্গিত।
২৬ রাষ্ট্রনেতার সমাগম
অতিপরিকল্পিত এই সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিচ্ছেন ২৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন মিয়ানমার, মঙ্গোলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জিম্বাবুয়ে ও মধ্য এশিয়ার নেতারা। চীনের প্রকাশিত তালিকায় পশ্চিম থেকে কেবল সার্বিয়া ও স্লোভাকিয়ার নেতাদের নাম রয়েছে। থিঙ্ক ট্যাংক চ্যাথাম হাউজের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইউ জি মন্তব্য করেছেন, ‘শি জিনপিং তার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করতে চাইছেন, বিশ্ব হবে বহুমেরুকেন্দ্রিক, নেতৃত্ব দেবে চীন, আর তাকে ঘিরে থাকবে অসংখ্য পশ্চিমাবিরোধী দেশ।’
যুক্তরাষ্ট্রকে ‘খোঁচা’
চীনের সামরিক প্যারেড শুধু রাষ্ট্রনেতাদের সমবেত করার ক্ষমতা দেখানোর জন্যই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি তুলনার বার্তাও বহন করছে। জুন মাসের মাঝামাঝি নিজের ৭৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ওয়াশিংটনে সামরিক প্যারেডের আয়োজন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক সাইমন ভেজেম্যান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যর্থ ও নিষ্প্রভ’ প্যারেডের পর অল্প সময়ের মধ্যেই চীনের এই আয়োজন এসেছে। তার ধারণা, ‘চীন আসলে যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিচ্ছে, তোমরা যদি প্যারেড করো, আমরা সেটা আরও জাঁকজমকভাবে করতে পারি।’
নতুন অস্ত্র প্রদর্শন
এ বছর উন্মোচন হতে পারে নতুন একাধিক অ্যান্টি-শিপ মিসাইল। যার নাম ‘ইয়িং জি’ বা চীনা ভাষায় ‘ঈগলের আক্রমণ’। এসব ক্রুজ, ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক মিসাইল যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীকে প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া প্যারেডে তুলে ধরা হবে জাপানকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ভূমিকা।