
ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের ক্বালিবাফ জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ট্রায়ো (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি) কর্তৃক যৌথ বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ) বা পরমাণু চুক্তির স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করার প্রতিক্রিয়ায় দেশটি শিগগিরই একটি “প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা” ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) পার্লামেন্ট অধিবেশনে বক্তৃতায় ক্বালিবাফ ইউরোপীয় ট্রায়োর এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ইরান বারবার এ ধরনের উদ্যোগের অবৈধতা ব্যাখ্যা করেছে। পাশাপাশি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র, বিশেষ করে রাশিয়া ও চীনও এ অবস্থানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, “ইউরোপের তিন দেশ নিজেদের জেসিপিওএ প্রতিশ্রুতি পালন করতে ব্যর্থ হয়ে স্ন্যাপব্যাক সক্রিয় করার কোনো অধিকার রাখে না। তবুও তারা অবৈধভাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে ইরানের জন্য প্রয়োজন একটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে এসব অবৈধ ইউরোপীয় উদ্যোগের খরচ বাড়ে এবং তাদের এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বাধ্য করা যায়। এ বিষয়ে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরই ঘোষণা ও কার্যকর করা হবে।”
সম্প্রতি নতুন এক উত্তেজনার অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ট্রায়ো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র জেসিপিওএ থেকে সরে যাওয়ার পর এটাই তেহরানের বিরুদ্ধে তিন ইউরোপীয় দেশের সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইরান এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অবৈধ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তেহরান সতর্ক করে বলেছে, ইউরোপ নিজেই যখন চুক্তির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, তখন তাদের স্ন্যাপব্যাক সক্রিয় করার কোনো এখতিয়ার নেই। ইরান আরও জানিয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে তারা পাল্টা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হবে।