
পাকিস্তান প্রতিপক্ষের আক্রমণ মোকাবিলায় তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নতুনভাবে সাজাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ রকেট ফোর্স কমান্ডো (ARFC) গঠনের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, এটি হবে পাকিস্তানের প্রচলিত যুদ্ধক্ষমতার নতুন মেরুদণ্ড।
পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতে নিজেদের সামরিক কৌশলের কিছু দুর্বলতা উপলব্ধি করে। আধুনিক যুদ্ধব্যবস্থায় যেখানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেখানে ইসলামাবাদ অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। সেই ঘাটতি পূরণেই রকেট ফোর্স কমান্ডো গঠন করা হয়েছে।
বর্তমানে পাকিস্তানের হাতে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্থল থেকে স্থল, আকাশ থেকে স্থল ও স্থল থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য হলেও এগুলো সরাসরি দেশের পারমাণবিক নীতির সঙ্গে সংযুক্ত। নতুন এআরএফসি মূলত সেই নীতি থেকে আলাদা হয়ে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ব্যবস্থা ও নির্ভুল আঘাত ক্ষমতা গড়ে তুলতে মনোনিবেশ করবে। এর ফলে সংঘাত বাড়ার ঝুঁকি থাকলেও পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি কম থাকবে।
বর্তমানে এআরএফসির হাতে রয়েছে ফাতেহ-১ ও ফাতেহ-২ রকেট, যেগুলোর পাল্লা ১৪০ কিলোমিটার থেকে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। মে মাসের সংঘাতে এগুলো ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে হাতফ-সাদ বা বাবর নামে পরিচিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এখনও পারমাণবিক নীতির সঙ্গে যুক্ত।
পাকিস্তান এখন বুঝতে পারছে, শুধু পারমাণবিক অস্ত্রনির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আঞ্চলিক শক্তি ও প্রতিরক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়। তাই রকেট ফোর্স কমান্ডোকে একটি কেন্দ্রীভূত কমান্ড হিসেবে গঠন করা হয়েছে, যা প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন, সংরক্ষণ ও ব্যবহারের দায়িত্বে থাকবে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন একজন তিন তারকা জেনারেল।
এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। একদিকে ভারত দীর্ঘ পাল্লার আঘাতক্ষমতা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তানও প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা জোরদার করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এআরএফসি শুধু একটি সামরিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বাস্তবতায় এক নতুন মোড়।