
ইসরাইলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভেনেজুয়েলা। এবার সেই বন্ধুত্বের প্রতিদান দিতে ভুল করলেন না আয়াতুল্লাহ খামেনি। আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে কারাকাসের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে তেহরান।
ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধে ভেনেজুয়েলা একা নয়। লড়াইয়ে তাদের পাশে থাকবে অন্তত তিন বন্ধু—রাশিয়া, চীন ও ইরান। কারণ এই চার দেশের অভিন্ন প্রতিপক্ষ আমেরিকা। তবে ইরান ও ভেনেজুয়েলার সম্পর্ক বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৫০ বছরের পুরনো এই সম্পর্ক ২০০০ সালের পর থেকে আরও শক্তিশালী হয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার হওয়াই দুই দেশকে আরও কাছাকাছি এনেছে।
অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা
ইরান–ভেনেজুয়েলা সম্পর্ক দৃঢ় করার অন্যতম মাধ্যম হলো তেল। বিশ্বের বৃহত্তম তেলভাণ্ডার ভেনেজুয়েলায় থাকলেও আধুনিকীকরণের অভাবে তাদের শোধনাগারগুলো অচল হয়ে পড়ে। তখন সহায়তার হাত বাড়ায় তেহরান। ইরান কারাকাসকে পরিশোধিত তেল, রিফাইনারি যন্ত্রাংশ এবং কারিগরি সহায়তা দেয়। এর বিনিময়ে কারাকাস থেকে অপরিশোধিত তেল ও স্বর্ণের মতো সম্পদ পায় ইরান। এ সহযোগিতা মার্কিন চাপ মোকাবিলায় উভয় দেশকে টিকিয়ে রেখেছে।
২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ইরান সফরে দুই দেশ ২০ বছরের সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর আওতায় জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি ও পর্যটন খাতে অংশীদারিত্ব করছে তারা। ইরান ভেনেজুয়েলাকে ভ্যাকসিনসহ স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা দিয়েছে।
সামরিক সহযোগিতা
দুই দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্কও গভীর। ২০১২ সাল থেকেই ইরানের সহায়তায় ভেনেজুয়েলা ড্রোন তৈরি করছে। এগুলো নজরদারি ও সীমান্ত টহলে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীতে ইরান তাদের উন্নত আক্রমণকারী ড্রোন সরবরাহ করে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ব্যবস্থা দিয়েছে তেহরান।
বাড়তে থাকা উত্তেজনা
সম্প্রতি আমেরিকা ভেনেজুয়েলার উপকূলে যুদ্ধজাহাজ মোতায়ন করায় উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলা ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ফোনালাপ হয়। তাতে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ভেনেজুয়েলার প্রতি তেহরানের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।