
গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ আটকে রেখে এবং ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নৈরাজ্য ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এমনটাই অভিযোগ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
গতকাল শুক্রবার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে “ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স” (ফরাসি সংক্ষেপে এমএসএফ)-এর গাজা প্রকল্প সমন্বয়ক ক্যারোলিন উইলেমেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কিছুটা ত্রাণ প্রবেশ করলেও গাজায় খাদ্য পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ রকম সংকটপূর্ণ। মানুষ চরম ক্ষুধায় দিন কাটাচ্ছে।’
তিনি জানান, খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে যারা সামনে আসছেন, তাদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। আর এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর নীতি ও আচরণকে দায়ী করছেন তিনি।
‘ইসরায়েল যেন ইচ্ছাকৃতভাবে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে, যেন খাবারের জন্য লড়াই করে মানুষ মরুক- এটাই যেন তাদের লক্ষ্য,’ বলেন উইলেমেন।
গাজায় চলমান যুদ্ধের তৃতীয় পর্বে এই ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ আরও গভীর হচ্ছে। অথচ এখনো কার্যকর কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের গাজা প্রকল্প সমন্বয়ক ক্যারোলিন উইলেমেন বলেন, ‘নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাবে-এমন কোনো ইঙ্গিতই নেই। ফলে প্রতিদিন মানুষ জীবন ঝুঁকিতে ফেলে খাবারের খোঁজে পথে নামছে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু।
এই নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬২ জনের, যার মধ্যে ৯২ জনই শিশু।
একই দিনে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন চিকিৎসা সূত্র।
তাদের মধ্যে অন্তত ৪৯ জন নিহত এবং ২৭০ জনের বেশি আহত হয়েছেন- যারা ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার হন।
চরম খাদ্য সংকট, ধারাবাহিক বোমাবর্ষণ এবং নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে গাজার পরিস্থিতি দিন দিন আরও মানবিক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে, তবু কার্যকর ত্রাণ সহায়তা ও যুদ্ধবিরতির কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।