Image description

বিশ্ব রাজনীতির উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে আলোচনা করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। রোববার (১৩ জুলাই) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কসহ একাধিক ইস্যুতে মতবিনিময় হয়।

 

চীনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরটি আসে উত্তর কোরিয়ায় তিন দিনের সফর শেষে। লাভরভ আসন্ন সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে অংশ নিতে মঙ্গলবার উত্তর তিয়ানজিন শহরে পৌঁছাবেন। তার আগেই চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইর সঙ্গে এই বৈঠক হয়, যার লক্ষ্য ছিল দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সহযোগিতা গভীর করা এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোতে সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া তৈরি।

 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, ওয়াং ই এবং লাভরভ কোরীয় উপদ্বীপ, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইরান ইস্যু নিয়ে “মতবিনিময়” করেছেন, যদিও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। একইসঙ্গে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং ইউক্রেন সংকটের ভবিষ্যৎ সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছে।

 

বিশেষ করে, লাভরভের উত্তর কোরিয়া সফরের সময় কিম জং উন রাশিয়ার প্রতি ‘নিঃশর্ত সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন ইউক্রেন যুদ্ধে। এদিকে, চীন ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে অবস্থান বজায় রেখেছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “দুই দেশই ইউক্রেন সংকট সমাধানে জাতিসংঘ সনদের মূলনীতি অনুযায়ী অগ্রসর হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।”

 

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, “বর্তমান বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সহযোগিতা আরও গভীর করা, উভয় দেশের উন্নয়নকে উৎসাহ দেওয়া এবং অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতির মোকাবিলায় যৌথভাবে প্রস্তুত থাকা।” তিনি আরও বলেন, রাশিয়া ও এসসিও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে তিয়ানজিন সম্মেলনের প্রস্তুতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নির্ধারণ করা হবে।

 

চলতি বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিরোধ যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী হিসেবেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বেইজিং সেই যুদ্ধকে “জাপানি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ” হিসেবে উল্লেখ করে থাকে।

 

জবাবে লাভরভ জানান, রাশিয়া চীনের সঙ্গে বহুমাত্রিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী এবং দুই রাষ্ট্রপ্রধানের কৌশলগত দিকনির্দেশনার আলোকে সম্পর্কের নতুন মাত্রা তৈরি করতে প্রস্তুত। তিনি আশ্বাস দেন, তিয়ানজিন সম্মেলনের সফলতার জন্য রাশিয়া পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে এবং যোগাযোগ ও সহযোগিতা আরও গভীর করবে।

 তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি