
ইসরাইলের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, ইরানের ৪০টির বেশি সামরিক স্থাপনায় ৭০টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এসব স্থাপনার মধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং কমান্ড অবকাঠামোও রয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
শনিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক হামলার কারণে ডজনখানেক বিমান তেহরানের আকাশে অবাধে চলাচল করছে। আমরা পশ্চিম ইরান থেকে তেহরান পর্যন্ত আকাশসীমায় মুক্তভাবে অভিযান চালাতে পারছি।
তিনি আরও জানান, হামলার সময় তেহরানের আকাশে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে যুদ্ধবিমান ও ড্রোন টহল দেয়।
ডেফরিন বলেন, আমরা এমন এক অবস্থান তৈরি করেছি, যেখানে তেহরান পর্যন্ত আকাশে আমাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তেহরান এখন আর নিরাপদ নয়।
এই বিবৃতির মাধ্যমে ইসরাইল স্পষ্ট করেছে যে, তাদের লক্ষ্য কেবল সীমান্তবর্তী অঞ্চল নয়, বরং ইরানের রাজধানী পর্যন্ত বিস্তৃত সামরিক অভিযানের আওতাভুক্ত।
এ পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় ইরানে ৮০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৩২০ জন। আর ইরানের হামলায় আহত হয়েছে ইসরাইলের চারজন। আহত বেশ কয়েকজন।
এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহন পথ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। বিষয়টি নিয়ে তারা ‘গভীর পর্যালোচনা’ করছে—এমনটাই জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য ইসমাইল কোসারির বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ওমান ও ইরানের মধ্যবর্তী এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ দিয়ে বিশ্বে পরিবেশিত তেলের একটি বড় অংশ স্থানান্তরিত হয়। হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাবনার খবর প্রকাশের পরপরই বৈশ্বিক বাজারে তেলের দামে উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক তৌফিক রহিম বলেন, ইসরাইল এখনো ইরানের তেল অবকাঠামোতে হামলা চালায়নি। কিন্তু যদি হামলা হয়, তাহলে প্রভাব হবে আরও ভয়াবহ ও ব্যাপক। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বে জ্বালানির সরবরাহ চক্রে বড় ধাক্কা লাগবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।