
সম্প্রতি লন্ডনে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
ড. ইউনূস-তারেকের এই বৈঠকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হলেও সন্দেহ রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। পাশাপাশি, বৈঠকে রাজনৈতিক সংকট দূর হয়েছে বলে দাবি অনেকের। তবে আশ্বস্তও হতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ স্পষ্ট করা হয়নি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবেই—এ নিয়েও সন্দেহ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের। তাঁদের মতে, নির্বাচনের আগে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষাও পূরণ করতে হবে সরকারকে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘ইলেকশনের ধোঁয়াশা কাটেনি, সংকটও সেভাবে কাটেনি। লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে আইস ব্রেকিং হয়েছে মাত্র।’
কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘৭ মাস বা ৮ মাস পর যে নির্বাচনটা হবে, সেই নির্বাচনটার এখনই ফেব্রুয়ারিতে তারিখ নির্ধারণ হয়ে গেল—এটা বলার মতো সময় এখনও আসেনি। উভয়পক্ষ চাচ্ছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনটা করার।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাই সনদ, সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতে দায়বদ্ধ এই সরকার। নির্বাচনের আগে যদি এসব আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হয় আবারও বাধা আসতে পারে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘বিচারের যে প্রক্রিয়া চলছে, যে গতিতে চলছে, এতে কবে নাগাদ বিচার শেষ হবে তার কোনো ঠিক নেই। সংস্কার আর বিচার এই সরকারকে করতে হবে। এই দুটি না করতে পারলে আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেবে না।’
কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার না করে কীভাবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব সংস্কার, প্রস্তুতিসহ নানা বিষয় আছে। শুধু রাজনৈতিক সমঝোতাতেই এটি সম্ভব নয়।’