Image description
 

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর সংসদ অধিবেশন শুরু হতেই বিরোধীদের প্রবল আক্রমণের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সায়নী ঘোষ কটাক্ষ, ব্যঙ্গ ও প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেন তাঁকে।

লোকসভায় আলোচনার সময় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেন, স্যার, খেলা তো শুরু হয়ে গেছে। অনেক রকম খেলা আছে। খুব বেশি গেম খেলবেন না। এরপরই তিনি মোদির নির্বাচনী দাবি নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেন, আপনি বলেছিলেন ৪০০ পার হবে। এখন তো ৪০০ তো দূরের কথা, ২৪০-এ এসে ঠেকেছে। এতে তো আপনি হেরে গেছেন স্যার।

তাঁর এই বক্তব্যে সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দেখা যায় মন খারাপ করে চুপ করে বসে থাকতে।

 

একই অধিবেশনে তৃণমূলের আরেক সাংসদ ও অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জনগণ যাদের জয়ী করেছে তারা দেশের উন্নয়নের বদলে দেশকে ফকির বানিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ ভাবে দেশ আমাদের মা, কিন্তু এই সরকার তাকে রক্ষা করতে পারেনি।

 

সায়নী আরও বলেন, ছোটবেলায় শুনতাম রোববার বা সোমবার শিশুরা ডিম খাবে। কিন্তু আজকের ভারতে অনেক শিশুর ভাগ্যে এক মাসেও একটা ডিম জোটে না। তিনি অর্থনৈতিক দুরবস্থা, শিশু পুষ্টি এবং কৃষক সংকট তুলে ধরে প্রশ্ন তোলেন, এই সরকার কি শুধুই ধনীদের জন্য?

তিনি কটাক্ষ করে বলেন, স্যার, হুনতে আছি আপনি রোজ দুধ, বাদাম, মডার্ন খাবার খান। কিন্তু সাধারণ মানুষ কী খায়, সেটাও ভেবে দেখেন কি?

সায়নী ঘোষ মোদি সরকারের জিএসটি নীতিরও কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, সাধারণ কৃষককে পণ্য বিক্রি করতে গেলে ১২ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়, কিন্তু বড় ব্যবসায়ীরা কর ছাড়াই পণ্য বিক্রি করতে পারে। এটা কি ন্যায়সংগত?

তিনি আরও বলেন, এটা তো কেবল ট্রেলার, পুরো পিকচার এখনও বাকি।

শেষে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কৃষক ভেবেছিল মোদি এলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ১০ বছর পর সে বুঝেছে, মোদি আছে মানেই দেশ ফকির হয়ে গেছে।

বিরোধী এই বক্তব্যগুলোর পর মোদির প্রতিক্রিয়া কী হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচনে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার প্রেক্ষিতে সংসদে মোদিকে আরও কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে।