
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ‘ভারতের প্রোপাগান্ডা উন্মোচন করতে’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ রাজধানীগুলোতে একটি উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোববার রাতে (১৮ মে) রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ‘রেডিও পাকিস্তান’-এর বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—গত মাসে পহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ভারত পাকিস্তানকে কোনো প্রমাণ ছাড়াই দায়ী করে। এর জেরে ৬ থেকে ৭ মে রাতের মধ্যে পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে বিমান হামলা চালায় ভারত। এতে বেসামরিক প্রাণহানি ঘটে। এর জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় জেট ভূপাতিত করে।
ভারতের পাঠানো ড্রোন আটকে দেওয়া এবং একে অপরের বিমানঘাঁটিতে পাল্টা হামলার পর গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উভয় দেশ অস্ত্র নামিয়ে সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা করে। ভারত আগ্রাসী মনোভাব বজায় রাখলেও পাকিস্তান সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সতর্ক করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ উত্তেজনা ও পহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের প্রচারণার জবাব দিতে উচ্চপর্যায়ের একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী একটি টেলিফোন আলাপে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিতে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এই দলে আরও আছেন—ড. মুসাদিক মালিক, প্রকৌশলী খুররম দস্তগীর, সিনেটর শেরি রেহমান, হিনা রাব্বানি খার, ফয়সাল সুবজওয়ারি, তহমিনা জানজুয়া এবং জলিল আব্বাস জিলানি।
প্রতিনিধিদলটি লন্ডন, ওয়াশিংটন, প্যারিস ও ব্রাসেলস সফর করবে এবং ভারতের মিথ্যা প্রচারণা ও দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিরতা সৃষ্টির প্রচেষ্টাগুলোর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরবে। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানের আন্তরিক প্রচেষ্টাও তুলে ধরা হবে।
গতকাল বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমি গর্বিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দায়িত্ব গ্রহণ করেছি এবং এই কঠিন সময়ে পাকিস্তানের সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এদিকে একই ধরনের এক পদক্ষেপে ভারতও ঘোষণা করেছে, সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল চলতি মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার দেশগুলো সফর করবে। এই সফরে ভারতের সন্ত্রাসবাদবিরোধী অবস্থান এবং ‘জাতীয় ঐকমত্য’ উপস্থাপন করা হবে।