Image description

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি দুজন পরস্পর বন্ধু, এই গল্প অতীত হয়ে গেছে। মার্কিন নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এবার থেকে বিন্দুপরিমাণ ছাড় পাচ্ছে না ভারত। ভারতীয় পণ্য আমদানির ওপর ২ এপ্রিল থেকে শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমেরিকার এ ঘোষণায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংসের পথ দেখবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডা, মেক্সিকো, চীন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের ওপরও অতিরিক্ত শুল্কারোপের হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি।

গত রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প জানান, ২ এপ্রিল থেকে শুল্কের ঘোষণাটি প্রযোজ্য হবে। যুক্তরাষ্ট্র কেবল সেই দেশগুলোর ওপর পাল্টা শুল্ক বসাবে, যারা মার্কিন পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করে বা যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এ শুল্কারোপ করা হচ্ছে, কোনো ছাড় নেই।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিটের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ট্রাম্পের নতুন নীতির আওতায় ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য দেশগুলো মার্কিন পণ্যের ওপর যে হারে শুল্ক আরোপ করবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই একই হারে তাদের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করবে। রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্কের ক্ষেত্রে কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। এই বিষয়ে ট্রাম্প দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ফলে অনেক ভারতীয় কোম্পানি অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে, যার ফলে কোম্পানিগুলো বাজার থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হবে এবং বিদ্যমান পণ্যের ঘাটতি আরও বেড়ে যাবে। যা ভারতের স্থানীয় কোম্পানিগুলোর জন্যও শুল্কের ধাক্কা ভয়াবহ হবে।

ভারতের ওপর আমেরিকার শতভাগ শুল্কারোপ কার্যকর হলে- আমেরিকায় ভারতের ৭০০ কোটি ডলারের বাণিজ্যের ওপর আঘাত আসবে বলে জানান ভারতীয় কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। তিনি বলেন, ভারতের গাড়িশিল্পের আয়ের ২৭ শতাংশই আসে আমেরিকার বাজার থেকে। পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি। আমরা একেবারেই অন্ধকারে আছি। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়া নিয়ে যথাযথ পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাণিজ্য গবেষণা সংস্থা জিটিআরআইয়েল মতে, ওষুধ খাত ভারতের বৃহত্তম শিল্প রপ্তানি। ভারত বার্ষিক প্রায় ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওষুধ আমেরিকায় রপ্তানি করে। এতে কোনো কর দিতে হয় না দিল্লিকে। তবে ভারতে আসা আমেরিকার কোম্পানিগুলোকে ওষুধ রপ্তানির জন্য ১০ দশমিক ৯১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে ৩০টি খাতে পণ্য রপ্তানি করে ভারত। এর মধ্যে ছয়টি কৃষি ও ২৪টি শিল্পখাতের পণ্য। এমনবস্থায় শতভাগ শুল্কারোপ কার্যকর হলে ভারতীয় অর্থনীতি বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে বলে বড় আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।