
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, রাশিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে সহায়তা। তবুও সেখানে চলছে খাদ্য ও ওষুদের জন্য চলছে হাহাকার। এদিকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলায় সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
মিয়ানমারে উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। তারা বলছে, দেশটিতে ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষের আশ্রয়, খাদ্য ও পানি জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরের দিকে মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটিতে এক শতাব্দির বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত বছরের প্রাচীন গির্জা ও আধুনিক ভবনও ধসে যায়।
প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটের সরকারি গণমাধ্যম। নিখোঁজ রয়েছে প্রায় ৫০০ মানুষ। আর আহতদের সংখ্যাও ৪ হাজারের বেশি।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয়কের কার্যালয় বলেছে, ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লোকজনের মৌলিক চাহিদা যেমন বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সরঞ্জাম সরবরাহ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সংস্থাটির জরুরি সেবা শাখার সদস্যরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা লোকজনকে শনাক্ত ও তাদের কাছে জীবন-রক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছাতে অবিরাম কাজ করেছে।
আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি (আইআরসি) বলেছে, মান্দালয়ের মতো এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছের এলাকাগুলোতে মানুষের আশ্রয়, খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এদিকে মিয়ানমারে ২০২১ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে গৃহযুদ্ধ চলছে।
সরকারবিরোধী সশস্ত্র বাহিনী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) এককভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও, সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ এখনো চলছে।
এনইউজি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন ত্রাণ সরাসরি ভূমিকম্প-আক্রান্ত জনগণের কাছে পৌঁছানো হয় এবং সেনাবাহিনী যেন তা আটকে না দেয়।
জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ পর্যবেক্ষক টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, মিয়ানমারে এখন প্রাণ বাঁচানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, জীবন নেওয়ার ক্ষেত্রে নয়।