
সুইডেনের শিক্ষামন্ত্রীর ‘অযাচিত অভিযোগের’ প্রতিবাদে তেহরান সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সুইডিশ শিক্ষামন্ত্রীর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে দেওয়া ‘অযৌক্তিক বক্তব্য এবং ভিত্তিহীন ও অযাচিত অভিযোগের’ তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রদূত ম্যাথিয়াস ওটারস্টেডকে জানানো হয়েছে, তার দেশের মন্ত্রীর বক্তব্য ‘আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী’।
এই কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে সুইডেনের শিক্ষামন্ত্রী ইয়োহান পেরসনের একটি মন্তব্যের জেরে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে সুইডিশ দৈনিক এক্সপ্রেসেনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইরানকে একটি ‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘ইরান একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র, যেখান থেকে বহু সুইডিশ নাগরিক পালিয়ে এসেছে। সেখানে নারীবিদ্বেষ, ইহুদিবিদ্বেষ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং তারা সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকায়ি সোমবার সুইডিশ মন্ত্রীর এ মন্তব্যকে ‘অগ্রহণযোগ্য, বাস্তবতা ও সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন’ বলে অভিহিত করেন।
এদিকে এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হলো, যখন সুইডেনের সরকার শুক্রবার আহমদরেজা জালালির মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। ইরানি-সুইডিশ বংশোদ্ভূত এই শিক্ষাবিদ ২০১৭ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন। সুইডেন জালালির ‘পরিবারের সঙ্গে ফের মিলিত হওয়ার জন্য মানবিক বিবেচনায় তার অবিলম্বে মুক্তি’ দাবি করে জানিয়েছে, তিনি ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা’ পাওয়ার যোগ্য।
কারাগারে থাকাকালীন সুইডিশ নাগরিকত্ব পাওয়া জালালি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি অভিযোগ করেন, তার মুক্তির জন্য সুইডেন যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এর আগে গত বছরের ১৫ জুন তেহরান দুই সুইডিশ নাগরিক—ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক জোহান ফ্লোডেরুস (২০২২ সালের এপ্রিলে আটক) এবং সাঈদ আজিজিকে (২০২৩ সালের নভেম্বরে গ্রেপ্তার) মুক্তি দেয়। এর বিনিময়ে সুইডেন মুক্তি দেয় হামিদ নুরি নামের এক ইরানি কর্মকর্তাকে, যিনি সুইডেনে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছিলেন।
ইরানের বিচার বিভাগ দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃতি দেয় না, তাই তেহরান এই ঘটনাকে বন্দিবিনিময় হিসেবে উল্লেখ করেনি।