Image description

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে আলোচনার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ওই বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। খবর সিএনএনের।

এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যখন জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন হোয়াইট হাউসে আসতে পারেন।

 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাতে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট- ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে।

 

বৈঠকের পর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অর্থবহ মিটিং করেছি। এত চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না।

এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।

ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।

বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে।

এই বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের খনিজসম্পদ নিয়ে শুক্রবার তার সঙ্গে জেলেনস্কির চুক্তি সই হবে। গতকাল শুক্রবার রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধের পুরো পরিস্থিতি যেন উল্টে যেতে বসেছে।

 
সবাইকে চমকে দিয়ে যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও রাশিয়ার পক্ষে গেছে। ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত যত ব্যয় করেছে, তা উসুল না করা পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিকে কোনো সহায়তা করতেও রাজি নন। এ রকম পরিস্থিতিতে তার প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি খনিজ চুক্তি করতে এদিন বৈঠকে বসেন তারা।

এর আগে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, প্রধান যে দাবি ইউক্রেন করেছে, সেই নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া এ চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে; কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এ ধরনের চুক্তি কি আদৌ সুরক্ষা দিতে পারবে ইউক্রেনকে?

যুদ্ধ বন্ধে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। এ আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানোয় চমকে যায় পুরো বিশ্ব। এমনকি ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোকেও সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এরকম অবস্থায় এ উদ্যোগের বাস্তব কার্যকারিতা নিয়ে আগেই প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যে ট্রাম্প-জেলেনস্কির শুক্রবার বৈঠক পরিণত হয় হৈচৈ আর বিশৃঙ্খলায়।