চিকিৎসায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর রেসিডেন্ট, নন-রেসিডেন্ট ও এফসিপিএস কোর্সে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ)। কিন্তু এত শিক্ষার্থীর জন্য কোনো আবাসন ব্যবস্থাই নেই প্রতিষ্ঠানটির। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম পুরনো ভবন ‘এ ব্লক’কে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী হল হিসেবে, যেখানে বর্তমানে ২৭০ জন শিক্ষার্থীর আবাসনের সুযোগ হয়। অবশ্য ২০১৫ সালের পর নতুন কোনো অ্যালটমেন্ট দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহবাগ-সায়েন্সল্যাব সড়ক লাগোয়া ৭ তলাবিশিষ্ট এ ব্লক ভবনটিকে অন্তত ২ বছর আগে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লিউডি)। সড়কঘেঁষা হওয়ায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপেও দোলে এই ভবন। কিন্ত এতদিনেও ঝুঁকি আমলে নেয়নি প্রশাসন। অস্থায়ী হল ছাড়াও ব্লাড ব্যাংকসহ ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং চিকিৎসকদের ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে এই ভবনটিতে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোর্সগুলো এমনভাবে সাজানো, যাতে প্রশিক্ষণার্থীদের ২৪ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক থাকতে হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি ডিউটি, রাউন্ড, এসবেও অংশ নিতে হয় তাদের। ফলে আবাসন সুবিধা না থাকায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। একই সাথে বাইরে থাকতে হয় উচ্চ ভাড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর মার্চে ৫ বছর মেয়াদি রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম শুরু হয়। এ প্রোগ্রামে বছরভেদে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হন বিএমইউতে। এর মধ্যে কোনো কোনো কোর্সের মেয়াদ থাকে ৭ বছর পর্যন্ত। চলতি ২০২৬ সালের মার্চ সেশনের জন্য ৪৮২ জনকে বিএমইউতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারিতে সেশন শুরু হওয়া ডিপ্লোমা-এমফিল (অধুনা নন-রেসিডেন্সি) প্রোগ্রামে ভর্তি হন আরও দুই থেকে তিনশ জন। এর বাইরে জানুয়ারি ও জুন—দুই সেশনে এফসিপিএস কোর্সে আরও প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হন, যা পরিচালনা করে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস)।
এ ছাড়া সারাদেশে বিভিন্ন চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিএমইউর অধীনেই দেড় হাজারের উপর রেসিডেন্ট চিকিৎসক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। আর ডিপ্লোমা-এমফিলে ভর্তি হন আরও প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী। এত শিক্ষার্থীর জন্য সারাদেশে কোনো আবাসনের ব্যবস্থাই রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্ডারগ্রাজুয়েট ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা থাকলেও পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা বাইরে থাকতে বাধ্য হন।

বাম পাশে কাঠের বোর্ড দিয়ে বানানো একটি কক্ষ, ডান পাশের পুরো ব্লকটিই কাঠের বোর্ড দিয়ে বানানো হয়েছে
শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোর্সগুলো এমনভাবে সাজানো, যাতে প্রশিক্ষণার্থীদের ২৪ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক থাকতে হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি ডিউটি, রাউন্ড, এসবেও অংশ নিতে হয় তাদের। ফলে আবাসন সুবিধা না থাকায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। একই সাথে বাইরে থাকতে হয় উচ্চ ভাড়ায়। একমাত্র বিএমইউ ক্যাম্পাসে আবাসনের সুবিধা থাকলেও সে সুযোগ হয় মাত্র আড়াইশ শিক্ষার্থীর।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অস্থায়ী’ এই আবাসিক ভবনটির ২য়, ৪র্থ, ৫ম, ষষ্ঠ ও ৭ম তলার কিছু কক্ষ শিক্ষার্থীদের হল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। নিচ তলা ব্যবহার হয় মার্কেট হিসেবে, যেখানে অধিকাংশ ওষুধের দোকান রয়েছে। ভবনের ২য় তলায় রয়েছে ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগ। এ ছাড়া ২য় তলার একটি অংশ ও ৭ম তলায় প্রায় ৩০ জন নারী শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। আর বাকি কক্ষগুলোতে প্রায় ২৪০ জন পুরুষ রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট প্রশিক্ষণার্থী বসবাস করেন। এ ছাড়া ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলায় মসজিদ, ৭ম তলায় ডাইনিং হল ও কমনরুম এবং ৫ম তলায় ক্যাফেটেরিয়া ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার রয়েছে।
কাঠের বোর্ড দিয়ে বানানো কক্ষে মানবেতর জীবনের পাশাপাশি সিলিং খসে পড়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। রাস্তা ঘেঁষা বিল্ডিং হওয়ায় ভারী গাড়ি যাওয়ার সময় কম্পন অনুভব করা যায়। হলে ওঠার জন্য দুটি লিফট রয়েছে, যার একটি খুবই ছোট। আর অপরটিতে সারাদিনই লম্বা সিরিয়াল লেগে থাকে। আবার সন্ধ্যার পর লিফট বন্ধ হয়ে যায়— নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা
ভবনটিতে মোট ২৭০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা হলেও উল্লেখযোগ্য একটি অংশে কাঠের বোর্ড দিয়ে বানানো কক্ষে থাকেন পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ কক্ষের সিলিং খসে পড়ছে নিয়মিত। ৪র্থ তলায় কথা হয় শিশু সার্জারি বিভাগের রেসিডেন্ট প্রশিক্ষণার্থী ডা. উমাইর চৌধুরীর সঙ্গে। ইরানের শিরাজ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিবিএস শেষে দেশে ফিরে বিএমইউর রেসিডেন্সি কোর্সে ভর্তি হন তিনি। তার কক্ষে প্রবেশ করেই দেখা গেল বিছানার উপর বিভিন্ন সময়ে সিলিং খসে পড়ার চিহ্ন। সাধারণত যেখানে মাথা রাখার কথা, সে স্থানের সোজা উপরের সিলিং খসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ডা. উমাইর চৌধুরী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কখন মাথার উপর সিলিং খসে পড়ে তার নিশ্চয়তা নাই। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকি বিবেচনায় আমি অপর পাশে মাথা রেখে ঘুমাই।

বিভিন্ন কক্ষে এমন চিত্রের দেখা মেলে
২০২৩ সালেই এ ব্লক ভবনটিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দেয় রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। শুধু এ ব্লক নয়, মোট ১২টি ভবনের মধ্যে গণপূর্ত ও রাজউক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ‘বি ব্লক’ এবং নবনির্মিত ‘ডি ব্লক’ নিয়েও সতর্ক করা হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল ভবন এ ব্লক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কাঠের বোর্ড দিয়ে বানানো কক্ষে মানবেতর জীবনের পাশাপাশি সিলিং খসে পড়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। রাস্তা ঘেঁষা বিল্ডিং হওয়ায় ভারী গাড়ি যাওয়ার সময় কম্পন অনুভব করা যায়। হলে ওঠার জন্য দুটি লিফট রয়েছে, যার একটি খুবই ছোট। আর অপরটিতে সারাদিনই লম্বা সিরিয়াল লেগে থাকে। আবার সন্ধ্যার পর লিফট বন্ধ হয়ে যায়।
পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনো সিকিউরিটির ব্যবস্থাও নেই ভবনটিতে। ভবনের কোনো কোনো অংশ আবাসিক হিসেবে ব্যবহার হলেও অবাধ যাতায়াত রয়েছে সবার। ফলে চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে অনেক। এ ছাড়া গাড়ি-ঘোড়ার ভেঁপুর পাশাপাশি শাহবাগে প্রতিদিনের আন্দোলন আর গলাফাঁটা দাবি-দাওয়ায় হলের শিক্ষার্থীদের জীবন ত্রাহি ত্রাহি।

ভবনের মাঝারি আকারের লিফটিতে সব সময় এমন সিরিয়াল থাকে
সোমবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে পড়তে আসা একাধিক পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রায়শ ভবনের নড়াচড়া টের পান তারা। শব্দ-প্রতিরোধী ব্যবস্থা থাকায় পড়তে আসা বড় একটি অংশের সমস্যা না হলেও সড়কের পাশের অংশে যারা বসেন, তাদের সমস্যা হয়।
এদিকে সাম্প্রতিক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে ভবনটির নিরাপত্তা ইস্যু। ইতোমধ্যে ভবনের ঝুঁকি নিরূপণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দুটি কমিটি গঠনা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্রাজুয়েট অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ (আইপিজিএমআর) যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে এটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আইপিজিএমআর বর্তমান এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এর আগে এটি ছিল হোটেল শাহবাগ, যা ১৯৫০ এর দশকে নির্মিত হয়। যদিও এর আগেও এখানে ভবনের অস্তিত্ব ছিল। কেউ কেউ বলছেন, ১৯০৬ সালে এ এলাকায় মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা হয়। ভবনগুলোর কোনো একটি সে সময়ে ছিল নবাবদের দ্বিতল ‘ইশরাত মঞ্জিল’। পরবর্তীতে নির্মাণ হয় হোটেল শাহবাগ, যা পরবর্তীতে আইপিজিএমআর অধিগ্রহণ করে। ঢাকার প্রথম তিন তারকা হোটেলটি চারতলা ভবন থাকলেও বর্তমানে বর্ধিত করে তা ৬ তলায় রূপান্তর করা হয়েছে। একই সাথে বর্ধিত হয়েছে এ ব্লক ভবনটিও, যা বর্তমানে ৭ তলা। এ ব্লকটি পাকিস্তান আমলে মুসলিম লীগের কার্যালয় ছিল, যা বাংলাদেশ হওয়ার পর তৎকালীন সরকার অধিগ্রহণ করে আইপিজিএমআরের অন্তর্ভুক্ত করে।

সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৭ম তলায় ক্যাফেটেরিয়ায় ভীড় লেগে থাকে সব সময়
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৩ সালেই এ ব্লক ভবনটিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দেয় রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। শুধু এ ব্লক নয়, মোট ১২টি ভবনের মধ্যে গণপূর্ত ও রাজউক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ‘বি ব্লক’ এবং নবনির্মিত ‘ডি ব্লক’ নিয়েও সতর্ক করা হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল ভবন এ ব্লক।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজউক ও গণপূর্তের রিপোর্টের পর এটি নিয়ে বেশ চিঠি চালাচালি হলেও কোনো সমাধান হয়নি। পরবর্তীতে ভবনটিকে ভূমিকম্প সহনীয় করার জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছিল। বিএমইউর দুটি ভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ১৩টি ভবন সংস্কারের জন্য এই প্রস্তাব ২০২৪ সালের ২৭ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উত্থাপন করা হয়। তবে এ নিয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রকল্পটি এক বছর পেরিয়ে গেলেও একনেকে পাস হয়নি। আমাদের তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে যেন দ্রুত সময়ে এটি পাস হয়।

ভবনের ছাদে ‘হাওয়ার উপর’ দুলছে এই ভারী ওজনের বিলবোর্ড
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ভবনটি সংস্কারের জন্য পুরোটা খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে ৭ম তলা খালি করার নোটিশ দিয়েছেন হল প্রভোস্ট। তবে এর আগেও গত ৬ অক্টোবর সংস্কারের জন্য হল খালি করার নোটিশ দেওয়া হলেও খালি করেননি শিক্ষার্থীরা। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর হলের সিট বরাদ্দের নোটিশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। নোটিশে ২০ অক্টোবরের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এরও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তবে মিটিংয়ের কথা বলে তিনিও সময় দেননি। পরবর্তীতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
গণঅভ্যুত্থানের পর হল দখলে নেয় বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। এর মধ্যে বড় অংশ ড্যাবের দখলে রয়েছে।
হল প্রভোস্ট ডা. জামাল উদ্দীন আহমদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৪) থেকে এক সপ্তাহের জন্য হল বন্ধ থাকবে। এ সময়ে হলের সংস্কার কাজ চলবে। বৈধ অ্যালটমেন্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু বৈধ এবং কিছু অবৈধ শিক্ষার্থী রয়েছে। নতুন অ্যালটমেন্ট হওয়ার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে ভূমিকম্পের পর ওই বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী এই হল দখলে রেখেছিলেন আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতাকর্মীরা। এ সময় হলে অবৈধ কার্যকলাপেও তারা জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর হল দখলে নেয় বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। এর মধ্যে বড় অংশ ড্যাবের দখলে রয়েছে।
এরই মধ্যে এ ব্লক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার সকালে হলের অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, হল খালি করার বিষয়ে নারাজ এসব চিকিৎসক। তবে পুরো হল খালি না করে ক্রমান্বয়ে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় পুরো হল খালি করতে হলে আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হল অথবা ইন্টারন্যাশনাল হলে সাময়িক ব্যবস্থা করা, অথবা অন্তত আসবাবপত্র রাখার জন্য ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।