Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যার নাম দেয়া হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি)। তবে এখনো হয়নি হয়নি অধ্যাদেশ জারি। ঠিক হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল। অথচ ভর্তি নেয়া হয়েছে শিক্ষার্থী। ক্লাস শুরু না হওয়ায় এখন সেশনজটের কবলে পড়ছেন তারা।

চলতি বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নূরনবী ইসলাম। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে এক সেমিস্টারের ক্লাস শেষে আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষা তারিখ ঘোষণা করেছে সেখানে প্রস্তাবিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠোই তৈরি হয়নি। আর শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর কোনো খবরই নেই।

 
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বারের পরীক্ষার্থী, এতে এক বছর চলে গেছে। এখন ঢাকা সেন্ট্রালে ভর্তির আরও এক বছর পার হচ্ছে। ফলে আমি শিক্ষা জীবন থেকে দুই বছর খোয়ালাম।
 
শুধু নূরনবী নন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগেই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এখন পরিচয়হীন। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের দায়িত্ব নিচ্ছে না। বারবার স্মারক লিপি, আন্দোলন ও অনশন করলেও মিলছে না সমাধান। শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো তৈরির আগপর্যন্ত অন্তত কলেজের নিয়মে ক্লাস নেয়া। 
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর মতামত যাচাই-বাছাইয়ে পর্যায়ে রয়েছে। এর মডেল নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে মতানৈক্যের পাশাপাশি মৌলিক বিভাগগুলোকে বাদ দেয়াসহ নারী শিক্ষা সংকোচনের আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়েছে।
 
 
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা বলছেন, ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা এখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই নেই, ফলে তাদের ক্লাস নেয়া এখতিয়ার বহির্ভূত। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন তারা।
 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সব ধাপ সম্পন্ন না করেই শিক্ষার্থী ভর্তি করাকে হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন শিক্ষাবিদরা। দ্রুত সরকারকে এই শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরিচয় নিশ্চিত করার পরামর্শ তাদের।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ‘এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলো না, তার কাঠামেসা কী হবে, রূপরেখা কী হবে, শিক্ষক করা হবেন, ক্যাম্পাস কোথায় হবে? এসব কিছু ঠিক না করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা, কেবল ভুল না রীতিমত অপরাধ।’
 
প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় বিলম্ব হবে বলে মনে করি না। দ্রুত হয়ে যাবে। সবকিছু প্রস্তুত হলে গেলেই ক্লাস দ্রুত শুরু করে দেয়া যাবে।’